বৃষ্টি বাদ সাধলেও জমে উঠেছে ঈদের বাজার

হাতে গোনা দিন বাকি ঈদের। জেলা জুড়ে এখন তাই বিকিকিনির তুমুল ব্যস্ততার ছবি। মাঝে বৃষ্টির জন্য এক-আধ বেলা বাজার মার খেলেও, এই কদিনের বিক্রির হিড়িক দেখে খুশি জেলার ব্যবসায়ীরা। তবে তাঁদের আশা, বৃষ্টি জনিত মন্দা পুষিয়ে দেবে সপ্তাহ শেষের দুটো দিন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০০:৫৯
Share:

ক্যাটালগ দেখে কাপড় কিনছেন মহিলারা। রামপুরহাটের একটি দোকানে। ছবি তুলেছেন অনির্বাণ সেন

হাতে গোনা দিন বাকি ঈদের। জেলা জুড়ে এখন তাই বিকিকিনির তুমুল ব্যস্ততার ছবি। মাঝে বৃষ্টির জন্য এক-আধ বেলা বাজার মার খেলেও, এই কদিনের বিক্রির হিড়িক দেখে খুশি জেলার ব্যবসায়ীরা। তবে তাঁদের আশা, বৃষ্টি জনিত মন্দা পুষিয়ে দেবে সপ্তাহ শেষের দুটো দিন।

Advertisement

সপ্তাহ শেষে ঈদ হলেও কার্যত এখনই জেলাজুড়ে উৎসবের মহড়া শুরু হয়েছে। ইফতার পার্টিকে ঘিরে হররোজ বাজার জমে উঠেছে। চলছে ঈদের কেনাকাটিও। দুর্গাপুজোর আগেই ঈদ হওয়ায় প্রতিবার পুজোয় কী ধরনের পোশাক জনপ্রিয় হতে চলেছে সেটা দেখে নেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এবার দিন কয়েক আগে থেকেই ঈদের কেনাকাটা নিয়ে ভিড়ের ছবি ধরা পড়েছে জেলার তিন মহকুমা শহরে।

কার্যত নতুন পোশাক থেকে জুতো, আতর থেকে টুপি, চুরি আর নানা প্রসাধন দর-দস্তুরে জমজমাট জেলার ঈদের বাজার। ঈদের দিন যতো এগিয়ে আসছে, জেলা জুড়ে ভিড় জমছে বাজার এলাকায়। নলহাটি, রামপুরহাট, সিউড়ি, দুবরাজপুর এবং বোলপুরের ব্যবসায়ীদের একাংশ যদিও বলছেন, দু’ এক দিন আশানুরূপ বাজার পাননি তাঁরা। কারণ হিসাবে তাঁরা বৃষ্টির কথা বলছেন।

Advertisement

ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত ঈদে বাজার জমে ঠিক দশ দিন আগে থেকে। কিন্তু কৃষি মরসুমের জন্য ভিড় কোথাও কোথাও কম। জেলা জুড়ে পর পর কয়েক দিন ভাল বৃষ্টি হওয়ায় অনেকে চাষের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে, দু’ এক দিন কেনাকাটা কিছুটা মার খেলেও শেষেবেলায় বাজার জমবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

দুবরাজপুরের বস্ত্র ব্যবসায়ী দিলীপ দত্ত, সিউড়ি মোতালিব হোসেন সিদ্দিকি বা মারিয়ম বিবি, রামপুরহাটের শুভদীপ মণ্ডল, আনোয়ার আলি কিংবা নলহাটির কাপড় বিক্রেতা রবীন্দ্রনাথ শর্মারা বলেন, “এখন সিনেমা, টিভি সিরিয়াল দেখে মানুষের মধ্যে ফ্যাশান সচেতনতা বেড়েছে। কেনাকাটিও বেড়েছে। প্রতিবার ঈদের বাজারের হাবভাব দেখে দুর্গাপুজোর বাজারও আন্দাজ করা যায়।”

ব্যবসায়ীদের কথায়, এবার মেয়েদের মধ্যে মধুবালা ও পাখি চুরিদার ও লং কুর্তি বা ফ্রকের চাহিদা খুব। অন্য দিকে বাংলা সিরিয়াল বা সিনামার নামে বিভিন্ন সুতির ছাপা শাড়ির চাহিদাও রয়েছে। বেনারসী, কাঞ্জিভরম, তাঁতশিল্ক বা ঢাকাই জামদানী-র মতো শাড়ির বাজার এবারও ভালো। বোলপুরের বাসিন্দা ফিরদৌস বেগম বলেন, “এবার ঢাকাই জামদানী কিনেছি। এখনও বাজার শেষ হয়নি। কেনা কাটি চলছে বৃষ্টি বাঁচিয়ে।” রামপুরহাটের নারায়ণপুরের গোলবানু বিবি মেয়ে-জামাইয়ের জন্য বাজার করতে এসেছিলেন বোলপুরে। তিনি বলেন, “বাজার ঘুরে এবার একটু চড়া দাম মনে হল। আর একটু দেখে, পছন্দ না হলে টাকা দিয়ে দেব।”

ছোটদের জন্য রেডিমেড পোশাকের বিক্রি এবারও বেশি। পুরুষদের জন্য জিন্স, ন্যারো জিন্স, রকমারি টি-শার্ট এবং সুতির শার্ট এর চাহিদা রয়েছে ভালোই। ঈদের টুপিরও এবার নানা বাহার। আতর, সুরমা জয়নামাজপাটি, বেল্ট, রোদচশমার বিক্রির ঢল দেখা গেল সিউড়ি এলাকায়।

সিউড়িতে দীর্ঘ দিন ধরে টুপি ও আতর বিক্রি করেন ফজলুল হক। বলেন, “সারা বছরে আমাদের বাজার বলতে ঈদের আগে পনেরোটা দিন। এবার বৃষ্টি হলেও ভালোই বিক্রি হচ্ছে। তবে চুরি ও প্রসাধনীর জন্য বাজারে ভিড় জমবে ঈদের ঠিক দু’ দিন আগে।”

শেষ বেলায় বাজার আরও জমবে, এমন আশা করছেন দুবরাজপুরের ব্যবসায়ী নীলকন্ঠ দেও। তিনি বলেন, “ঈদের আগের দিন মেহেন্দী পরার একটা চল রয়েছে। ভিড় হবে এবারও সপ্তাহের শেষ দুটো দিন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন