বেহাল সেতুতে যান চলাচল বন্ধ, বিক্ষোভ

সংস্কারের অভাবে জাতীয় সড়কের ওপর কুলে নদীর সেতুর একটি অংশ বসে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হয়েছিল বৃহস্পতিবার। বিপদের আশঙ্কায় শুক্রবার সেই সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ করতে, জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। যান চলাচল বন্ধের খবরে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখাল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৪
Share:

সংস্কারের অভাবে জাতীয় সড়কের ওপর কুলে নদীর সেতুর একটি অংশ বসে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হয়েছিল বৃহস্পতিবার। বিপদের আশঙ্কায় শুক্রবার সেই সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ করতে, জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। যান চলাচল বন্ধের খবরে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখাল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে। বিক্ষোভে সামিল হয় স্থানীয় গাড়ি চালকদের একাংশও। পানাগড় মোড়গ্রাম জাতীয় সড়কে মহম্মদবাজারের কুলিয়া গ্রামের ঘটনা।

Advertisement

মোরগ্রাম-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের সেতুটি প্রায় চার মিটার এলাকা জুড়ে বসে যায়। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার সকালে। প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় লোকজন সেতুর বসে যাওয়া অংশে পাথর ফেলে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করেন। খবর পেয়ে জাতীয় সড়কের কর্ম-কর্তারা ঘটনাস্থলে এসে হাজির হন। তাঁরা সেতুর বসে যাওয়া অংশটি ঘিরে দেন। অন্য পাশ দিয়ে শুধু হালকা গাড়ি চলাচল করার অনুমতি দেয়। সমস্ত ভাড়ি গাড়ি দু’ প্রান্তে থেমে যাওয়ায় সেতুর দু’ পাড়েই গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। আটকে যায় ভিনরাজ্যের ট্রাকও। অন্ধ্রের দুই ট্রাক চালক সেতুর উত্তর পাড়ে স্টোভ জ্বেলে রান্না করতে করতে বলেন, “ভেবেছিলাম সেতু ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু ঠিক হওয়াতো দূরের কথা কোনও গাড়িই চলতে দেওয়া হচ্ছে না।” মাথায় হাত পড়েছে, ক্ষোভ জমছে তাঁদের মধ্যেও।

প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, সমস্ত গাড়িকে মহম্মদবাজার থেকে মল্লারপুর ভায়া সাঁইথিয়া হয়ে ঘুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় সড়ক দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যান্য কর্মীরা এ দিনও সকাল থেকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদেরকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে দেখা যায়। আলোচনার পর তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, সেতু দিয়ে কোনওভাবেই গাড়ি যাতায়াত করতে দেওয়া যাবে না। কারণ, সেতুর অবস্থা ভাল নয়। যে কোনও সময় বিপদ ঘটে যেতে পাড়ে। এরপরই এরপরই এগজিকিউটভ ইঞ্জিনিয়ার নীরজ সিংঘ জেলা শাসকের কাছে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার আবেদন জানান।

Advertisement

নদীর উপর দিয়ে অস্থায়ী রাস্তা করে গাড়ি চালানো যায় কিনা সে ব্যাপারেও চিন্তা ভাবনা শুরু হয়। জেসিপি দিয়ে নদীর ধারের আগাছা পরিস্কার করা শুরু হয়। সে সময় স্থানীয় লোকজন ও বেশ কিছু গাড়ি চালক জাতীয় সড়কের কর্মীদেরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্থানীয়দের বক্তব্য, এভাবে সেতু দিয়ে যান বাহন চলাচল বন্ধ করে দিলে তো বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বা পরিবহন বলতে একমাত্র বাসের উপর সাধারন মানুষ নির্ভর করে। তাঁদের দাবি, অন্তত বাস চলাচলের ব্যবস্থা করা উচিত। তাঁদের অভিযোগ, “এই রাস্তা দিয়ে অনেক গাড়ি যাতায়াত করে। ওই সব ভাড়ী গাড়ির কারণেই সেতুর এই হাল। প্রশাসন যদি আগে থেকে একটু নজর দিত, তাহলে কাউকেই এভাবে ভুগতে হত না। বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। এবং সেতুটি জোড়া তালি দিয়ে সারালে চলবে না। নতুন করে নির্মাণ করতে হবে।” এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “সেতুর ব্যাপারে যা জানানোর দিল্লিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও জেলাশাসককে জানানো হয়েছে।”জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, “ওই সেতুটি বিপজ্জনক। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচলের ঝুঁকি আছে। সেতুটি দিয়ে যাতে গাড়ি চলাচল না করে তার জন্য তাঁরা আবেদন জানিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন