বন্ধ ফেরিঘাট, বিডিও-র দ্বারস্থ বাসিন্দারা

নদী ঘাটের দরপত্র চূড়ান্ত হওয়ার এক মাস পরও নদীতে নৌকা নামায়নি ঠিকাদার। ফলে নদী পারাপার করতে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে দিন কয়েক আগে বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন এলাকাবাসী। তবে সমস্যা এখনও মেটেনি খয়রাশোলের কাঁকরতলা থানা এলাকায় অজয় ঘেঁষা নবসন ঘাটের. এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বরাত নেওয়ার পর ঠিকাদার অজয় নদের ওই ঘাটে নৌকা চালাচ্ছেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খয়রাশোল শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৪ ০০:৫৭
Share:

নদী ঘাটের দরপত্র চূড়ান্ত হওয়ার এক মাস পরও নদীতে নৌকা নামায়নি ঠিকাদার। ফলে নদী পারাপার করতে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে দিন কয়েক আগে বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন এলাকাবাসী। তবে সমস্যা এখনও মেটেনি খয়রাশোলের কাঁকরতলা থানা এলাকায় অজয় ঘেঁষা নবসন ঘাটের. এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বরাত নেওয়ার পর ঠিকাদার অজয় নদের ওই ঘাটে নৌকা চালাচ্ছেন না। তাঁদের দাবি, হয় বরাত পাওয়া ঠিকাদার নৌকা চালানোর ব্যবস্থা করুক, না হয় এলাকার লোকেদের হাতেই ওই নদী ঘাটের দায়িত্ব দিক প্রশাসন। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলে আশ্বাস দেওয়া হলেও সমস্যা মেটার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খয়রাশোলের একটা বড় অংশের মানুষ অজয় (গ্রীষ্মকালে জল কম থাকালে) পেরিয়ে বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে। সেই সময় অস্থায়ী ভাবে যাতায়াতের রাস্তা তৈরি করে নেন স্থানীয় মানুষই। সমস্যা শুরু হয় বর্ষায়। তখন অজয় নদে জল ভরে যায়। তখন খয়রাশেলের কাঁকরতলা থানা এলাকার বিনুই, হজরতপুর, ভবাণীগঞ্জ, তামড়া এবং নবসন ইত্যাদি নদের ধার ঘেঁষা গ্রামের ঘাট থেকে নৌকা চলে। তাতে করেই অজয় পারাপার করেন এলাকার মানুষ। ঘাট চালানোর জন্য দরপত্র ডাকে খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতি। এ বারও তা ডাকা হয়েছে। সমস্যা তৈরি হয়ছে নবসন-জামালপুর ঘাটকে ঘিরেই।

কী সমস্যা? বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নৌকা চালু হলে প্রতিদিনই গড়ে ১০০ বার যাতায়াত করে। সেই নৌকায় চেপে অজয়ের ওপারে থাকা বাগডিহা, সিদ্ধপুরে পৌঁছে সেখান থেকে হরিপুর, রানিগঞ্জ, আসানসোল-সহ বর্ধমানের বিভন্ন জায়গায় বিভিন্ন কাজে যাতায়াত করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ বার খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ৪ জুন ৭০ হাজার টাকায় খয়রাশোলের নওপাড়ার এক বাসিন্দা বরাত পেলেও এ পর্যন্ত নৌকা নামাননি। পারাপারের অসুবিধার কথা জানিয়ে তাই ব্লক প্রশসনের দ্বারস্থ হয়েছেন এলাকাবাসীর একাংশ। হিরণ গড়াই, চঞ্চল মিত্র, ফটিক গোপ, শেখ রিয়াজ এবং শেখ মিলন বলেন, “খয়রাশোলের নবসন, জামালপুর, শিমূলডিহি, কৈথি কাঁকরতালা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ বিভিন্ন কাজে বর্ধমানে যাতায়াতের জন্য এই পথই বেছে নেন। তাঁদের মধ্যে সাধারন মানুষ, সব্জি, মুড়ি ব্যবসায়ীরা যেমন রয়েছেন তেমনই চিকিৎসার জন্য অজয় পেরিয়ে বর্ধমানে যেতে ওই গ্রামের মানুষ এই ঘাট ব্যবহার করেন। কারণ, বীরভূমের বাসিন্দা হলেও জেলা সদর সিউড়ির দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। সেখানে অজয় পেরিয়ে বর্ধমানের রানিগঞ্জ মাত্র ২০ কিমির মধ্যে। কিন্তু এখনও নৌকা না নামানোয় সমস্যা বেড়েছে।”

Advertisement

নৌকা নামানোর ক্ষেত্রে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব রয়েছে বলে মনে করছেন এলাকার বাসিন্দারা। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘাটের বারাত এতদিন যাঁদের দখলে ছিল তাঁরা এ বার না পাওয়াতেই সমস্যার শুরু। কেন না, নবসন, জামালপুর ও অজয়ের ওপারে থাকা দু’টি গ্রামের মানুষই ওই ঘাটের দায়িত্বে ছিল। এ বার ওই চার গ্রামের মানুষ ঘাটের বরাত পায়নি। গত বার ৪৫ হাজার টাকায় বরাত পেলেও এ বার সেখানে ৭০ হাজার দর উঠেছে। এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার যাঁরা বরাত পাননি অশোক মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীর লোকজন হিসেবে পরিচিত। এ বার যাঁরা বরাত পেয়েছেন তাঁরা নিহত অশোক ঘোষ গোষ্ঠীর লোকজন হিসেবে পরিচিত। এই নিয়েই দ্বন্দ্ব শুরু। এর জেরে এখনও নৌকা না নামায় অস্থায়ী ভাবে পারাপারের বন্দোবস্ত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এই নিয়ে আপত্তি তুলেছে প্রশাসন। ফলে জটিলতা আরও বেড়েছে। খয়রাশোলের যুগ্ম বিডিও অভিষেক মিশ্র বলেন, “সমস্যার কথা শুনেছি। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।” এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যা মেটাতে আসরে নেমেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। দু’পক্ষকেই রবিবার বিকেলে বোলপুরে ডেকেছেন তিনি। তবে কত দ্রুত সমস্যা মিটবে সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন