—নিজস্ব চিত্র
প্রথমে বিজেপি, পরে তৃণমূল। আর এবার কংগ্রেস!
একের পর এক দলীয় সভায় সরগরম হয়ে উঠছে পুরুলিয়া। রাজনৈতিক উত্তেজনার সেই পারদ যাই বলুক, ভিড়ের নিরিখে বিজেপি ও তৃণমূলকে সোমবার টেক্কা দিল কংগ্রেস। অন্তত তেমনই দাবি, সভায় নেতৃত্বের। অন্য দিকে লোকসভা ভোটের পর, শহরে কংগ্রেসের এটাই ছিল প্রথম প্রকাশ্য কর্মসূচি।
দিন কয়েক আগেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ সভা করে গিয়েছেন পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সি ষ্ট্যান্ডে। সেই একই জায়গায় তার পরপরই সভা করেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দুটি সভার পরে এ দিন রাস ময়দানে ছিল বিজেপির জনবিরোধী নীতি, সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও রাজ্য সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতার প্রতিবাদে কংগ্রেসের সভা। কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্বের দাবি, ‘উমাপদ বাউরির কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গেলেও দলের সাংগঠনিক অবস্থা যে একই রয়েছে’, সেই বার্তাই দলের কর্মীদের কাছে এ দিন তাঁরা পৌঁচ্ছে দিয়েছেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোরও দাবি, “এই সভার ভিড়ই সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিয়েছে।”
এ দিন সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “স্বীকার করতে হবে, আমি প্রদেশ সভাপতি হওয়ার পরে যত সভা করেছি, পুরুলিয়ার এই সভা সবচেয়ে বড় সভা।” অধীর বলেন, “পুরুলিয়ায় সম্পদ রয়েছে। অথচ পুরুলিয়া রাজ্যের ১৯টি জেলার মধ্যে ১৪ নম্বরে। সেচ নেই বলে ফসল হয় না। শিল্পের সম্ভবনা আছে, কিন্তু শিল্প নেই। রাজ্য সরকারের উন্নয়নের কোনও সদিচ্ছা দেখিনি। তাই আজ পুরুলিয়া দরিদ্রতম এলাকার নাম।”
জঙ্গলমহলের উন্নয়ন নিয়ে অধীরের দাবি, “পিছিয়ে পড়া জঙ্গলমহলের জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। তিনদিন আগে নবান্নে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় অর্থ খরচ হয়নি। বলুন কার ব্যর্থতা?” সভায় বক্তব্য রাখেন মানস ভুঁইয়াও। সভায় আসার পথে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে পুলিশি নিরাপত্তা বা পাইলট না দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মানসবাবু। বলেন, “এটা ফাজলামো হচ্ছে? অধীর চৌধুরীর সঙ্গে আপনাদের বিরোধিতা থাকতে পারে। কিন্তু, উনি একটা দলের প্রদেশ সভাপতি, সাংসদ এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এটা ভাবতে আমাদের লজ্জা করে যে, তৃণমূলের এক একটা ব্লক সভাপতির পিছনেও কারবাইন নিযে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে!” তাঁর আরও কটাক্ষ, “এখন তো এসপি, ডিএম-রাই তৃণমূলের সভাপতি আর সম্পাদক!”
এ দিন শহরে কংগ্রসের সভার পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চড় মারার ঘটনার প্রতিবাদে ধিক্কার মিছিল বের করে যুব তৃণমূল। জেলায় খরা ঘোষনার দাবিতে এ দিনই এসইউসিরও একটি বিক্ষোভ মিছিল ছিল। অন্যদিকে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার দাবিতে এ দিনই মিছিল সিটুর উদ্যোগে। সব মিলে শহরে যানজটে জেরবার ছিল এ দিনের পুরুলিয়া।