স্কুলের পঠন পাঠন ঠিক ভাবে হচ্ছে না। মিড-ডে মিল প্রকল্পে প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠল মুরারই থানার জাজিগ্রাম এসএ হাইস্কুলে। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে স্মারকলিপি দিলেন অভিভাবক, শিক্ষানুরাগী এবং এলাকার আটখানা গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। ১৯ দফা দাবিতে স্মারকলিপি কথা শিক্ষা ও পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদেরও জানানো হয়। এ দিনের স্মারকলিপি দেওয়ার বেশ কিছু দিন আগে দুর্নীতি, অর্থ তছরুপ, টিচার ইনচার্জের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীকে এক হওয়ার জন্য গ্রামে গ্রামে মাইকিং, লিফলেট বিলি করা হয়েছিল।
এ দিনের এই কর্মসূচিকে ঘিরে সকাল থেকেই জাজিগ্রাম এলাকায় বেশ উত্তেজনা ছিল। দশটা থেকে বিভিন্ন প্রান্তের অভিভাবক, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা জাজিগ্রাম বাসস্ট্যাণ্ডে প্রথমে জড়ো হন। পরে তাঁরা সেখান থেকে মিছিল করে স্কুল লাগোয়া ১০০ মিটার দূরে একটি বাগানে জমায়েত হন। সেখানে দু’জন বক্তব্য রাখার পর দুপুর ১২টার পর স্মারকলিপি দিতে যান আট জনের একটি প্রতিনিধি দল। ওই দলের অন্যতম সদস্য মহম্মদ জাকির হোসেন (বুলা)-র দাবি, “মিড-ডে মিলের প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকা দুর্নীতির সঙ্গে স্কুলের টিচার ইনচার্জ যুক্ত।” টিচার ইনচার্জ ধৈর্যধর রবিদাস বলেন, “আমি ৩০ মাস এই পদে থাকাকালীন ২২ লক্ষ টাকা পেয়েছি। সুতরাং ওঁদের অভিযোগ মিথ্যে।” জাকির হোসেন বলেন, “টিচার ইনচার্জ হওয়ার আগে মিড-ডে মিল দেখভাল করতেন উনি। সব মিলিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আমরা মিড-ডে মিলের ক্ষেত্রে ৫৬ লক্ষ টাকা তছরুপের তদন্তের দাবি জানিয়েছি। এ ছাড়া স্কুলের অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা খরচ হয়ে গেলেও এখনও শ্রেণি কক্ষের দরজা-জানলা বসানো হয়নি।” বুক গ্র্যান্ড, অনগ্রসর পড়ুয়াদের টাকা বিলির ক্ষেত্রেও দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। টিচার ইনচার্জ অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, “কিছু স্বার্থপর মানুষ আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কলুষিত করছেন। স্কুলে পঠনপাঠনের মান খারাপ হয়ে থাকলে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯২ শতাংশ ফল হত না এবং সেই সঙ্গে সায়ন সাহু নামে স্কুলের এক ছাত্র মাধ্যমিকে ৬৩৭ নম্বর পেত না। আবার এ বছর প্রথম উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল সেখানে প্রায় ৮৩ শতাংশ পড়ুয়া পাশ করেছে।” মুরারই ২ ব্লকের বিডিও রাখী পাল বলেন, “তদন্তের জন্য একটি টিম পাঠানো হয়েছে।”