বিয়ের ন’বছরের মধ্যে প্রথম কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার আট দিন পরে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল এক বধূর। বুধবার বাঘমুণ্ডি থানার কানুডি গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে বাপের বাড়ির লোকেরা তাঁকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। মৃত বধূর নাম সুষমা কুমার (৩৪)। তাঁর দাদা অরবিন্দ কুমার পুলিশের কাছে বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেওরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাঘমুণ্ডির ভুরসু গ্রামের সুষমার সঙ্গে ২০০৫-এ ধরনী কুমারের বিয়ে হয়। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর বোনের দেহ নিতে এসেছিলেন সুষমার দাদা অরবিন্দ কুমার। এ দিন তিনি অভিযোগ করেন, “বিয়ের পর থেকেই বোনকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন সন্তান না হওয়ার জন্য নানা গঞ্জনা দিত। কিন্তু আট দিন আগে ওর যখন কন্যাসন্তান হল তখন থেকে গঞ্জনা বেড়ে যায়। ভাল করে খেতেও দিত না। ওরাই খুন করে পালিয়েছে বলে সন্দেহ।”
কী ঘটেছিল বুধবার? সে দিন বিকেলের দিকে সুষমাদেবীর বাপের বাড়ির লোকজন খবর পান যে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অরবিন্দের দাবি, বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁরা কানুডি গ্রামে যান। গিয়ে দেখেন একটা বড় প্লাস্টিকের উপরে তাঁর বোনের দেহ পড়ে রয়েছে। মুখে গ্যাঁজলা বেরিয়ে ছিল। তিনি জানান, পড়শিদের কাছে জানতে পারেন, সুষমা ও তার শিশুকে ওই ভাবে ফেলে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে গিয়েছে। পড়শিরাই শিশুটিকে কোলে তুলে নেন। অরবিন্দ বলেন, “আমাদের অনুমান বিষ খাইয়ে বোনকে ফেলে রেখে ওরা পালিয়েছে। শেষ মুহূর্তে ওরা বোনকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিল বলে শুনেছি। কিন্তু অবস্থা খারাপ হওয়ায় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বোন মারা যায়। তারপর বাড়িতে ফেলে রেখে ওরা পালিয়ে যায়।” পুলিশ জানিয়েছে, অরবিন্দের অভিযোগের ভিত্তিতে বধূর স্বামী ধরনী কুমার, শ্বশুর রাখাল কুমার, শাশুড়ি অন্ন কুমার ও দেওর কে পি কুমারের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করা হয়েছে।