দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে সরকারি কলেজে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তা যাচ্ছে না আদ্রার এক মেধাবী ছাত্রের। আদ্রা শহর লাগোয়া আড়রা গ্রামের ওই তরুণ অমর বাউরি হুগলির শ্রীরামপুরের গর্ভনমেন্ট কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেক্সটাইলস টেকনোলজি কলেজের প্রোডাকশান ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু দারিদ্র যাঁর সঙ্গী, সরকারি কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েও সেই তরুণ তাই কী ভাবে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
অমরের বাবা তারাপদ বাউরি স্থানীয় এফসিআই-এর গুদামে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন। কিন্তু ছয় মাস ধরে কর্মহীন তিনি। সম্বল বলতে একচিলতে ছোট্ট মাটির বাড়ি। বিদ্যুৎ নেই। লন্ঠনের আলোতেই পড়াশোনা করে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় এ বার সাফল্য পেয়েছেন অমর। এলাকায় মেধাবী বলে পরিচিত ওই তরুণের এখন একটাই চিন্তা, সামান্য যেটুকু জমানো টাকা ছিল, কলেজে ভর্তি হতে গিয়েই সব শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি পড়াশোনার খরচ আসবে কী ভাবে?
আড়রা গ্রামে গিয়ে দেখা গেল মাটির বাড়ির দাওয়ায় বসে রয়েছেন তারাপদবাবু ও তাঁর স্ত্রী শকুন্তলা। ছেলে ভাল কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়ায় হাসি নয়, তাঁদের মুখ শুকনো। তাঁদের দুই ছেলের মধ্যে অমর বড়। ছোট ছেলে ভক্ত পাশের নিগমনগর হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ে। তারাপদবাবু বলেন, “অমর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে আমাদের চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। জমানো কিছু টাকা এবং কয়েকজনের সাহায্যে কোনও রকমে ওকে কলেজে ভর্তি করাতে পেরেছি। ছোট ছেলেরও পড়াশোনার খরচ জোগাতে হয়। এরপর আর সাধ্য নেই যে বাইরের কলেজে হোস্টেলে রেখে অমরকে পড়াতে পারব।”
অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন মা। তাঁর আক্ষেপ, “স্বামীর কাজ নেই ছয় মাস হয়ে গেল। তার উপরে আবার উনি অসুস্থ। কাজেই দিনমজুরি করার মতো ভারী কাজও করতে পারেন না। লোকের বাড়িতে আমি কাজ করে কোনও ভাবে সংসার টানছি। বাইরের কলেজে ছেলেকে পড়ানোর খরচ জোগাড় করতে না পারলে ছেলেটার ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যাবে।”
বাবা-মা’র পাশে মুখ নীচু করে বসেছিলেন অমর। তিনি বলে, “জয়েন্টে সুযোগ পাওয়ার পরে ভেবেছিলাম পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে বাবা মাকে দেখতে পারব। কিন্তু এখন দেখছি এই পড়াশোনা চালানোর খরচও অনেক। জানি না পড়াশোনা কতদূর হবে।”
দুর্ঘটনায় মৃত্যু। দ্রুত গতিতে মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়ার সময়ে একটি সেতুর উপর থেকে খালে পড়ে গেলেন তিন আরোহী। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল একজনের। বাকি দু’জনকে স্থানীয় বাসিন্দারা আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠান। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম পিন্টু যাদব (১৯)। বাড়ি রূপনারায়ণপুরের নিউ কলোনি এলাকায়। এ দিন দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটে বারাবনির নুনি মোড়ের কাছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোটরবাইকে চেপে আসানসোলের দিকে যাওয়ার সময়ে নুনি মোড়ের কাছে শশ্মানকালী মন্দির লাগোয়া সেতুর উপর থেকে নীচের খালে পড়ে যায় তিনটি ছেলে।