সিআইডি-র তালা ভেঙে চুরি

সিআইডি-র সিল করে দেওয়া ঘরের তালা ভেঙে ফ্রিজ ও আলমারি নিয়ে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। দু’দিন পরেই আবার চুরি করা জিনিসপত্র তারা কাছেই ঝোপঝাড়ে ফেলে দিয়ে গেল। রঘুনাথপুর থানার বাবুগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি আবাসনের চুরির এই ঘটনাকে ঘিরে বুধবার এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৩৩
Share:

বুধবার পুকুর পাড়ে মিলল চুরি যাওয়া ফ্রিজ।—নিজস্ব চিত্র।

সিআইডি-র সিল করে দেওয়া ঘরের তালা ভেঙে ফ্রিজ ও আলমারি নিয়ে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। দু’দিন পরেই আবার চুরি করা জিনিসপত্র তারা কাছেই ঝোপঝাড়ে ফেলে দিয়ে গেল। রঘুনাথপুর থানার বাবুগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি আবাসনের চুরির এই ঘটনাকে ঘিরে বুধবার এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। দুষ্কৃতীরা কেনই বা চুরি করা জিনিসপত্র ফেরত দিয়ে গেল তা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে। রঘুনাথপুরের এসডিপিও পিনাকী দত্ত বলেন, “পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

Advertisement

চার বছর আগে বাবুগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে এই আবাসনে খুন হন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট হেমন্ত সিংহরায়। তাঁর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছিল পুলিশ। ঘটনার পরেই ব্যাপক বিক্ষোভ হয় এলাকায়। খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে পথ অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জনতার চাপে আরপিএফ-এর কুকুর নিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে রাজ্য পুলিশ। পরে তদন্তভার যায় সিআইডি-র হাতে। তদন্তে নেমে যে আবাসনের মধ্যে খুন হয়েছিলেন হেমন্তবাবু সেই আবাসনটি সিল করে দেয় সিআইডি।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবারই ওই আবাসনের দরজার তালা ভাঙার ঘটনাটি প্রথম জানা যায়। সে দিনই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক অমিতাভ পাল রঘুনাথপুর ১ বিএমওএইচ-র মাধ্যমে ঘটনাটি লিখিত ভাবে রঘুনাথপুর থানায় জানিয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনাটি জানার পরেও তদন্তে আসেনি পুলিশ। এ দিন সকালের দিকে ওই আবাসন থেকে চুরি হওয়া আলমারিটি গ্রামে ঢোকার মুখে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারের পাশে পড়ে থাকতে দেখেন বাসিন্দারা। পরে গ্রামের প্রান্তে একটি পুকুরের পাড় থেকে উদ্ধার হয় ফ্রিজটি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। চুরির বিষয়টি জানার দু’দিন পরে কেন পুলিশ গ্রামে এসেছে, তা নিয়ে ক্ষোভ ছড়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে। পুলিশ কর্মীদের সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামবাসী।

Advertisement

তাঁরা দাবি করেন, সিআইডি-র সিল করে দেওয়া আবাসনে চুরির ঘটনার দ্রুত কিনারা করতে হবে পুলিশকে। গ্রামবাসীর মধ্যে দয়াময় কুম্ভকার, উত্তম রায়, দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়দের অভিযোগ, “চার বছর আগের খুনের কিনারা এখনও হয়নি। তার পরে আবার সেই আবাসন থেকেই চুরি হল। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাঝেমধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু পুলিশ কার্যকরী ব্যবস্থা নিচ্ছে না।” চুরির দ্রুত কিনারা করার দাবিতে এ দিন পুলিশের কাছে গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি দেন তাঁরা। পরে উদ্ধার হওয়া আলমারি ও ফ্রিজটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান পুলিশ কর্মীরা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি সিআইডি-র গোচরেও আনা হচ্ছে।

সোমবারই কেন পুলিশ তদন্তে যায়নি? পুলিশ কর্তাদের দাবি, তাদের কাছে সে দিন তালা ভাঙার মামুলি তথ্য দেওয়া হয়েছিল। সুনির্দিষ্ট ভাবে চুরির অভিযোগ হলে পুলিশ তখনই ব্যবস্থা নিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন