সিউড়িতে জেলাশাসকের দফতরের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা। —নিজস্ব চিত্র
বর্ষা এলেই রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের মধ্যে থাকা খয়রাশোলের শাল, হিংলো নদীর কজওয়ে ছাপিয়ে জল বয়ে যায়। বিঘ্নিত হয় যান চলাচল। চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। অথচ এলাকবাসী কিংবা কোনও রাজনৈতিক দল কোনও পক্ষই সে ভাবে ওই নদী দু’টির উপর স্থায়ী সেতু তৈরির দাবি তুলতে পারেনি প্রশাসনিক স্তরে। বুধবার সেই দায়িত্বই কাঁধে নিলেন এক সন্ন্যাসী। তিনি খয়রাশেলের পাঁচড়া গীতাভবনের মহারাজ স্বামী সত্যানন্দ। এ দিন ভোর পাঁচটা নাগাদ খয়রাশোলের ওই আশ্রম থেকে বেরিয়ে পায়ে হেঁটে ৩২ কিলোমিটার দূরে সিউড়িতে জেলাশাসকের কাছে গিয়ে স্থায়ী সেতুর জন্য দাবিপত্র পেশ করেন। তাঁর সঙ্গে পা মেলালেন প্রায় শ’দুয়েক মানুষ।
তবে সেতুর দাবিতে পদযাত্রা ওই সন্ন্যাসীর কাছে এটাই প্রথম নয়। ১৯৯৬ সালে অজয় নদের উপর সেতুর দাবিতে তিনি পায়ে হেঁটে গীতাভবন থেকে কলকাতায় রাজভবনে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তারপর আসানসোল থেকে সিউড়ি যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়কে থাকা অজয় সেতুর অনুমোদন পায় ১৯৯৮ সালে। কিন্তু ওই রস্তার উপর খয়রাশোলের শাল ও হিংলো নদীর ভাসাপুল একই থেকে গিয়েছিল। প্রতি বর্ষায় ভারি বৃষ্টি হলে বা খয়রাশোলের হিংলো জলাধার থেকে জল ছাড়লে শাল ও হিংলো নদীর কজওয়ে ছাপিয়ে জল বইতে থাকে। ২০০৬ সালে ওই রাস্তা জাতীয় সড়কের তকমা পায়। ৬ বছর পর রানিগঞ্জ থেকে দুবরাজপুর পর্যন্ত সংস্কার ও চওড়া করার কাজ হলেও শাল এবং হিংলো নদীর সেতু দু’টির অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। জাতীয় সড়ক হয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত যানবাহনের চাপ বেড়েই চলেছে। স্বামী সত্যানন্দ বলেন, “দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় সড়ক। সেই রাস্তার উপরে এমন বেহাল সেতু থাকায় সমস্যা হয় প্রচুর মানুষের। বিশেষ করে যাঁরা প্রতিদিন রুজির জন্য ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হন। জেলাশাসক যেহেতু জেলা প্রশাসনের প্রধান আধিকারিক তাই আমরা তাঁর কাছে এসেছি।” যদিও বুধবার দুপুরে জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী না থাকায় দাবিপত্রটি নেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রণবকুমার মণ্ডল। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। বিষয়টি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। জতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, ওই সেতু তৈরির জন্য সমীক্ষার কাজ শেষ করে এ ব্যাপারে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। তবে ওই খাতে এ পর্যন্ত টাকা বরাদ্দ হয়নি।