সোনামুখীর গ্রামে দরজা ভেঙে উদ্ধার দম্পতির দেহ

স্ত্রীর নিথর দেহ পড়ে খাটে। হাত-পা বাঁধা খাটের সঙ্গেই। মুখে ফেনা। পাখার সঙ্গে শাড়ির ফাঁসে দেহ ঝুলছে স্বামীর। তাঁর মুখেও ফেনা। জামাইষষ্ঠীর সকালে ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হল ওই দম্পতির দেহ। সোনামুখীর আলমপুর গ্রামের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সোনামুখী শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০০:৩৪
Share:

পাশাপাশি নিথর। বিষ্ণুপুর হাসপাতালে সুমন-সুকন্যার দেহ। বুধবার ছবিটি তুলেছেন শুভ্র মিত্র।

স্ত্রীর নিথর দেহ পড়ে খাটে। হাত-পা বাঁধা খাটের সঙ্গেই। মুখে ফেনা। পাখার সঙ্গে শাড়ির ফাঁসে দেহ ঝুলছে স্বামীর। তাঁর মুখেও ফেনা। জামাইষষ্ঠীর সকালে ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হল ওই দম্পতির দেহ। সোনামুখীর আলমপুর গ্রামের ঘটনা।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বধূর নাম সুকন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় (২১)। তাঁর স্বামীর নাম সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় (৩০)। পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সুকন্যা গত কয়েক মাস ধরে ছিলেন আলমপুরের নিজের বাপের বাড়িতে। সেনাবাহিনীর কর্মী সুমন কালিম্পঙে কর্মরত ছিলেন। ৩৫ দিনের ছুটিতে তিনি এসেছিলেন শ্বশুরবাড়িতে। সুকন্যার বাবা মিহির চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বুধবার কর্মস্থলে ফিরে যাওার কথা ছিল জামাইয়ের। মঙ্গলবার রাতে সেই মতো প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। কিন্তু, বুধবার সকাল সাড়ে ছ’টার পরেও মেয়ে-জামাই দরজা না খোলাই কড়া নেড়ে সাড়া পাইনি। তার পরে দরজা ভাঙা হয়। দেখি, খাটে হাত-পা বাঁধা মেয়ে। আর পাশে সিলিং ফ্যানে ঝুলছে জামাইয়ের দেহ। দু’জনের মুখেই ফেনা।” তিনি জানান, আলমপুর গ্রামের পাশেই বীরচন্দ্রপুরের বাসিন্দা সুমনের সঙ্গে বছর দুয়েক আগে দেখাশোনা করেই বিয়ে হয়েছিল তাঁর ছোট মেয়ে সুকন্যার। সুমনের কর্মস্থল প্রথমে রাজস্থান ছিল। মিহিরবাবুর কথায়, “সুকন্যা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে কয়েক মাস আগে আমার কাছে এনে রাখি। নিজেদের মধ্যে সামান্য কথাকাটাকাটি ছাড়া মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে তেমন কোনও বড় ঝামেলা হয়নি। তবু এমন কাণ্ড কী করে হল, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।” এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

এ দিন বিকেলে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মর্গ থেকে দেহ দু’টি নিতে এসে সুমনের কাকা শান্তিময় বন্দ্যোপাধ্যায়ও বললেন, “আমরাও খবর শুনে অবাক হয়েছি। এই ঘটনায় দাদাও খুব ভেঙে পড়েছেন।” ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ দু’টির সুরতহাল করেন বিডিও (সোনামুখী) বিশ্বজিত্‌ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “দু’জনের মুখেই ফেনা ছিল। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, বিষ খাওয়ানোর পর মৃত্যু অবধারিত করতে খাটে বাঁধা হয়েছিল মেয়েটিকে। পরে তার স্বামীও বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে।” পুলিশ জানিয়েছে, মেয়ের বাবা লিখিত ভাবে ঘটনাটি জানিয়েছেন। তবে, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন