ফের তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে নিহত সাগর ঘোষের বাড়ির কাছে বোমাবাজি করার অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার সকালে পাড়ুই থানার বাঁধ নবগ্রামের ঘটনা। এ দিন সন্ধ্যা অবধি ওই ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে, নিহতের ছেলে হৃদয় ঘোষের অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের আর্জির শুনানি রয়েছে। তার আগে আমাদের ভয় দেখাতেই তৃণমূলের গুণ্ডারা বোমাবাজি করেছে।” পুলিশকে মৌখিক ভাবে ঘটনার কথা জানালেও থানায় গিয়ে অভিযোগ জানানোর সাহস পাচ্ছেন না বলেই তাঁর দাবি। এসডিপিও (বোলপুর) সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, “ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ ওই এলাকায় গিয়েছিল। তবে, কোনও কিছুই মেলেনি।” পাড়ুই-কাণ্ডের তদন্ত চলাকালীন এর আগেও একাধিকবাবর সাগরবাবুর বাড়ির অদূরে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বোমাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে।
সাগরবাবুর খুনের ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) তদন্তে হৃদয়বাবুরা আগেই অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি নিম্ন আদালতে সিট-এর দাখিল করা চার্জশিটে নাম বাদ গিয়েছে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর। তার পরেই ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই পরিবার। কাল বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। বিচারপতি হরিশ টান্ডনের নির্দেশে ওই দিন এজলাসে রাজ্যের ডিজি জিএমপি রেড্ডির হাজিরা দেওয়ার কথা। শুনানির জন্য কলকাতা যাবেন হৃদয়বাবুও। কিন্তু তার আগেই এই বোমাবাজির পরে রীতিমতো আতঙ্কিত গোটা পরিবার।
এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ বাড়ির খুব কাছেই বোমাবাজি শুরু হয় বলে সাগরবাবুর পরিবারের অভিযোগ। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাগরবাবুর স্ত্রী সরস্বতীদেবী ও পুত্রবধূ শিবানীদেবী। বাড়িতে মোতায়েন পুলিশ কর্মীরা থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই অবশ্য দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। পরে সরস্বতীদেবী বলেন, “সকাল থেকে ঘরের ভেতরে সিঁটিয়ে রয়েছি। আমরা কেউ-ই বাইরে বেরোতে পারিনি। এমনকী, গরু-ছাগলগুলোকেও মাঠে নিয়ে যাওয়া যায়নি। বুঝতে পারছি না, পুলিশ মোতায়েন থাকার পরেও ওই দুষ্কৃতীরা এত সাহস পায় কোথা থেকে!” পরিবারের অভিযোগ, এ দিনের বোমাবাজির ঘটনায় তৃণমূলই জড়িত। হৃদয়বাবুর দাবি, “সকাল থেকে জনা চল্লিশেক দুষ্কৃতী দফায় দফায় বোমাবাজি চালায়। বাবার খুনের ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত শেখ মুস্তফা, শেখ ইউনিস এবং তাদের দলবলই এই কাণ্ড করেছে। দুপুরে গ্রামে পুলিশ আসার খবর পেয়ে ওরা পালিয়ে যায়।”