পঞ্চায়েতে কী হবে, প্রশ্ন সর্বত্রই

বিরোধী দলের নেতারা তো বটেই। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা নিয়ে সরব এ বার তাঁর দুই পূর্বসূরিও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ০৩:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিরোধী দলের নেতারা তো বটেই। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা নিয়ে সরব এ বার তাঁর দুই পূর্বসূরিও।

Advertisement

রাজ্যের ৭টি পুরসভার ভোট ঘিরে তাণ্ডব এবং কমিশনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠার পর দিন প্রাক্তন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সচেতন। তাঁরা নিজেরাই দেখছেন এবং উপলব্ধি করছেন, কী হচ্ছে! এমনই এক পরিস্থিতিতে আমার মনে হয়েছিল, যা চেয়েছিলাম, তা পারিনি। তাই হেলায় পদ ছেড়ে চলে এসেছিলাম।’’ বিধাননগরের পুরভোটে দুষ্কৃতীদের অবাধ তাণ্ডবের জেরে পুনর্নির্বাচনের আদেশ দিয়েছিলেন সুশান্তবাবু। শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা তাঁর দফতরে গিয়ে টানা ধর্না দিয়েছিলেন সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে। সেই চাপের মুখেই ইস্তফা দিয়েছিলেন সুশান্তবাবু। পদের মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন হলে বর্তমান নির্বাচন কমিশনার এ কে সিংহের ইস্তফা দেওয়াই উচিত ছিল, সুশান্তবাবুর মন্তব্যে প্রচ্ছন্ন ভাবে এমন ইঙ্গিত আছে বলেই মনে করছেন অনেকে।

গত বারের পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতের জেরে যিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, সেই মীরা পাণ্ডেও মুখ খুলেছেন। প্রাক্তন এই নির্বাচন কমিশনারের মত, অভিযোগকারীদের কথা কমিশনের প্রধান শুনবেন না, তা হতে পারে না।

Advertisement

আরও পড়ুন:বদলা নিতেই রোহতকের তরুণীকে এত নৃশংসভাবে খুন করেছিল ওরা!

কমিশনের ভূমিকা নিয়ে রবিবার থেকেই সরব ছিল বিরোধীরা। অভিযোগ শুনতে কমিশনার রাজি না হওয়ায় কংগ্রেস ও বাম নেতা-কর্মীরা কমিশনের দফতরে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন। এমন কমিশনারকে সামনে রেখে পঞ্চায়েত ভোটের চেহারা কী দাঁড়াবে, তা ভেবে এখন থেকেই আতঙ্কিত তাঁরা! তাঁদের যুক্তি, মাত্র ৭টি পুরসভার ভোট ঘিরেই যেখানে এত অশান্তি, গোটা রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েতের হাজার হাজার বুথে তা হলে কী হবে? সরকার ও কমিশন সুষ্ঠু পঞ্চায়েত ভোট নিশ্চিত করতে কিছু করবে না ধরে নিয়েই নিজেদের রণকৌশল ভাবতে শুরু করেছে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং বিজেপি।

বাম ও কংগ্রেস বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে পুরভোটের নামে প্রহসন ও কমিশনের ভূমিকা নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব আনতে চলেছে। মীরাদেবী ও সুশান্তবাবুর দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী মন্তব্য করেছেন, এমন ‘মেরুদণ্ডহীন’ কমিশনারের অধীনে পঞ্চায়েত ভোট সুষ্ঠু হতে পারে বলে তাঁরা মনেই করেন না! কমিশনে বিক্ষোভের পরে এ দিন বিজেপির শিশির বাজোরিয়া, সুভাষ সরকার ও সায়ন্তন বসুর সঙ্গে দেখা করেন কমিশনার। বিজেপি নেতাদের দাবি, কমিশনার তাঁদের জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া পঞ্চায়েত ভোট অসম্ভব। বিজেপি নেতৃত্ব ভাবছেন, মানুষের নিরাপদে ও নির্ভয়ে ভোট দেওয়া নিশ্চিত করতে তাঁরা কেন্দ্র ও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে নির্দেশিকা তৈরির আর্জি জানাবেন। পুরসভায় ভোট লুঠের তথ্য অমিত শাহকেও পাঠিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন