সিসি ক্যামেরা ছিল কি, ধন্দ বাড়াচ্ছে পুলিশ

শুক্রবার উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী শনিবার নবান্নে যাননি। তবে এ দিন নবান্নে রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের সঙ্গে বৈঠক করেন ডিজি (সিকিওরিটি) বীরেন্দ্র। হেমতাবাদ-ঘটনা নিয়ে পৃথক ভাবে রিপোর্ট দেওয়ার কথা তাঁদের দুজনেরই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভামঞ্চের চারপাশে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা না থাকা এবং ভিডিও না-তোলার তথ্য সামনে আসতেই পুলিশের একাংশ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তৎপর হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ভিডিও এবং স্থির ছবি জোগাড় করতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বৈদ্যুতিন চ্যানেল ও সংবাদপত্রের চিত্র সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, সে দিন সভাস্থলের আশেপাশে বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরা ছিল। রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে ভিডিও ক্যামেরাম্যানও রাখা হয়েছিল। কিন্তু এ সব কথা কেউই প্রকাশ্যে বলছেন না। আর তাতেই দাবির সত্যতা নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছে। শনিবার উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ শুধু বলেছেন, ‘‘সব কিছুই তদন্তের আওতায় রয়েছে।’’

Advertisement

শুক্রবার উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী শনিবার নবান্নে যাননি। তবে এ দিন নবান্নে রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের সঙ্গে বৈঠক করেন ডিজি (সিকিওরিটি) বীরেন্দ্র। হেমতাবাদ-ঘটনা নিয়ে পৃথক ভাবে রিপোর্ট দেওয়ার কথা তাঁদের দুজনেরই। ঘটনার দিন মঞ্চের সামনে, অর্থাৎ ‘ডি-জোনে’ ছিলেন ডিজি (সিকিওরিটি) স্বয়ং, এক জন ডিএসপি, এক জন ইনস্পেক্টর, দু’জন সাব ইনস্পেক্টর, ১২ জন এএসআই এবং কনস্টেবল (তাঁদের মধ্যে চার জন মহিলা পুলিশ)। ‘ডি-জোনে’র বাইরের এলাকা দেখার কথা ছিল জেলার পুলিশ সুপারের।

অতীতে দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রী হাঁটার সময়ে সেই রাস্তায় বিমল গুরঙ্গের কনভয় ঢুকে পড়ার কিছু দিন পরেই তৎকালীন নিরাপত্তা অধিকর্তা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় সিআইডি-র এডিজি পদে বদলি হন। অনেকে সেই প্রসঙ্গ সামনে আনতে চাইলেও রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, সঞ্জয়বাবুর বদলির সঙ্গে দার্জিলিঙের ঘটনার কোনও যোগ নেই। কারণ বদলির আগে পর্যন্ত তিনি নিরাপত্তা অধিকর্তাই ছিলেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ডি জোনের চার দিকে ৯৬ ফুট এলাকায় ভিডিও রেকর্ডিং হওয়ার কথা। তার পরেও দুই বোন রাবেয়া ও আসনুরা খাতুন কী ভাবে ডি জোনে ঢুকে পড়লেন, কী ভাবে রাবেয়া ডান দিকের সিড়ি দিয়ে মঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে গেলেন, তার ছবি আদৌ নিরাপত্তারক্ষীদের কোনও ক্যামেরায় ধরা পড়েছে কি না, তা এ দিনও পুলিশ স্পষ্ট করেনি। এমনকী আসনুরা কী ভাবে মঞ্চের বাঁ দিকের সিড়ি দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে ধরা পড়লেন, সেই ছবিও পুলিশের কাছে রয়েছে কি না, তা জানা যাচ্ছে না। পুলিশ কর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, মঞ্চের দু-দিকে বড় বড় সাউণ্ড বক্স ও উপভোক্তাদের বিলির জন্য বিভিন্ন সামগ্রী থাকায় ওই দু’জনের ছবি না-ও উঠে থাকতে পারে! দুই বোন এখনও হাসপাতালে। তাঁদের মা মামুদা এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের অভাব রয়েছে। কিন্তু ওই ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছতে চাওয়া ঠিক নয়।’’

এ দিকে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর পরবর্তী সভা নিয়ে অনেক বেশি তৎপর পুলিশ ও প্রশাসন। জেলা তৃণমূলের সভাপতি ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শনিবার বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিদেরও প্রশাসনের দেওয়া পরিচয়পত্র দেখিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় বসতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন