R G Kar Medical College and Hospital

দুর্নীতির তদন্তে এ বার নজর আর জি করে

দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী চিকিৎসক শিবিরেরও নিশানায় রয়েছে আর জি কর। অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ কার ‘আশীর্বাদে’ স্বাস্থ্য দফতরে বিশেষ ক্ষমতা ভোগ করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুকান্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৩২
Share:

আর জি কর হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির খাতায় দুর্নীতির অভিযোগে একে একে শিক্ষা, খাদ্য, পুরসভার পরে কি এ বার স্বাস্থ্য দফতরেরও নাম উঠবে? আপাতত এ নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি চলছে বলে আগেও অভিযোগ উঠেছে। সেই দুর্নীতির নেপথ্যে স্বয়ং অধ্যক্ষ রয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে দিনকয়েক আগেই ইডি-কে চিঠি পাঠিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী চিকিৎসক শিবিরেরও নিশানায় রয়েছে আর জি কর। অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ কার ‘আশীর্বাদে’ স্বাস্থ্য দফতরে বিশেষ ক্ষমতা ভোগ করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুকান্ত। কারণ, পরপর দু’বার বদলির নির্দেশিকা বেরোনোর পরেও তা বাতিল হয়েছে। পুরনো জায়গাতেই ফিরেছেন সন্দীপ। প্রথম বার কয়েক ঘণ্টার ও দ্বিতীয় বার কয়েক দিনের ব্যবধানে। তাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী কেন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। সুকান্তের কথায়, ‘‘এর আগে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছিলাম। এ বার ইডি-কে দিলাম। মামলাও করব।’’

প্রায় কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতিতে তাঁকে কাঠগড়ায় তোলা হলেও এ নিয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্যে রাজি নন সন্দীপ। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ ঘেউ ঘেউ করলেই উত্তর দিতে হবে, এমন তো নয়। ভ্রান্ত-ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে এর বেশি কিছু বলব না।’’ সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠ মহলে অধ্যক্ষ জানান, বিভিন্ন বিষয়ের কাগজপত্র তাঁর কাছেও আছে। প্রয়োজনে দাখিল করবেন। তাতে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে না বেরোয়। শিক্ষা, পুর নিয়োগ ও খাদ্য দফতরের দুর্নীতি নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য রাজনীতি। তাতে স্বাস্থ্য যুক্ত হলে কতটা শোরগোল বাড়ে, সেটাই দেখতে চান চিকিৎসক মহলের একাংশ।

Advertisement

নাক-কান-গলা বিভাগের প্রশিক্ষণে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নিয়ম ভেঙে ময়না তদন্তের জন্য আসা ছ’টি দেহ পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। চিকিৎসা বর্জ্যের পরিমাণ আর জি কর এবং এন আর এসে প্রায় এক হওয়া সত্ত্বেও ছ’মাসে দু’জায়গার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিমাণ দু’রকম কেন, উঠেছিল সেই প্রশ্নও। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আর জি করের তদন্ত কমিটিও বিভিন্ন অনিয়মের উল্লেখ করেছিল। যারা অনৈতিক ভাবে আর জি করের চিকিৎসা বর্জ্য বাইরে বিক্রি করছে, তাদের সঙ্গে অধ্যক্ষের যোগসাজশেরও অভিযোগ উঠেছে। আবার স্কিল ল্যাবের পরিকাঠামো তৈরিতে রাজ্যের অন্য এক মেডিক্যাল কলেজে সাড়ে ৬১ লক্ষ টাকা খরচ হলেও আর জি করে সেই কাজে ২ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়েছিল। বেসরকারি হাসপাতালের থেকেও চড়া দামে হাই-ফ্লো নেজ়াল ক্যানুলার সার্কিট কেনার বরাত দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আবার হাসপাতাল চত্বরে খাবারের দোকানের বরাতে বিশেষ একটি সংস্থাকে প্রাধান্য দেওয়া-সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে আর জি করে। বলা হচ্ছে, সবেতেই সন্দীপ জড়িত।

অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘বহু বার আর জি করের বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রশাসনকে লিখিত জানিয়েও ফল হয়নি। তাই এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’ স্বাস্থ্য শিবিরের একাংশও তিতিবিরক্ত। তাঁদের কথায়, ‘‘যত কাণ্ড, সব কি আর জি করেই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন