বাংলায় লোকসভা ভোটের জন্য দলকে তৈরি রাখতে চান রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
নানা উপনির্বাচন বা পঞ্চায়েত ভোটের ফল যেমনই হোক, বাংলায় লোকসভা ভোটের জন্য দলকে তৈরি রাখতে চান রাহুল গাঁধী। সেই লক্ষ্যেই তাঁর দূত এবং এআইসিসি-র নতুন পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈ কলকাতায় এসে মুখোমুখি আলোচনায় বসছেন দলের সাংসদ, বিধায়ক এবং প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে। শুধু তা-ই নয়, জেলা কংগ্রেসের সভাপতি এবং দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠন ও সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর। বাংলায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক হিসেবে গৌরবের পূর্বসূরি সি পি জোশীকে কয়েক বছরে কখনও এমন তৎপর হতে দেখা যায়নি।
জোশীর হাতে বাংলার পাশাপাশি আন্দামান ও নিকোবর এবং উত্তর-পূর্বের একগুচ্ছ রাজ্যের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পরে সংগঠনে রাহুলের নীতি, এক জন পর্যবেক্ষকের হাতে একটাই বড় রাজ্য থাকবে। জোশীর বদলে অসমের তরুণ সাংসদ গৌরবকে বাংলা এবং আন্দামানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পেয়েই পঞ্চায়েত ভোটের নিরিখে কংগ্রেসের হাতে-থাকা লোকসভা কেন্দ্রগুলিতে ফলাফলের পরিসংখ্যান চেয়ে ঘরোয়া প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন গৌরব। লোকসভা ভোটে বাম না তৃণমূল, কাদের সঙ্গে জোটের পথে পা বাড়ানো উচিত— তা নিয়ে বাংলায় কংগ্রেসের অন্দরে একাধিক মত আছে। কেন বামেদের সঙ্গেই কংগ্রেসের সমঝোতা হওয়া উচিত এবং তৃণমূলের সঙ্গে নয়, তা ব্যাখ্যা করে রিপোর্ট তৈরি করেছেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। আবার কেউ কেউ সওয়াল করছেন, তৃণমূলের সঙ্গে থাকলে বিজেপি-কে হারিয়ে কংগ্রেসের আসন জয় অন্তত নিশ্চিত হবে। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যে দু’দিনের সফরে এসে আনুষ্ঠানিক ভাবেই কংগ্রেসের নানা স্তরের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন গৌরব।
বিধান ভবনে আজ, সোমবার গৌরবের মুখোমুখি বৈঠক প্রথমে জেলা সভাপতিদের সঙ্গে। তার পরে রাজ্য থেকে নির্বাচিত সাংসদ ও বিধায়কদের সঙ্গে। মাঝে প্রদেশ কংগ্রেসের ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করবেন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে। প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সদস্য, বর্ষীয়ান নেতা, শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব ও সেলের প্রধানদের সঙ্গে পর্যবেক্ষকের বৈঠক কাল, মঙ্গলবার। তবে গৌরব তৎপরতা দেখালেও বাংলায় সেই ভাঙা হাটেই পড়তে হচ্ছে তাঁকে! পারিবারিক কাজে শহরের বাইরে যাচ্ছেন বলে বিধায়কদের বৈঠকে যেমন থাকতে পারছেন না বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, পরিষদীয় দলের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী। ইতিমধ্যে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন ১৩ জন বিধায়ক। আরও যে কয়েক জনকে নিয়ে জল্পনা রয়েছে, তাঁদের উপস্থিতি নিয়েও সংশয়। আবার প্রদেশ স্তরের নেতাদের বৈঠকেও কিছু মুখ না দেখা যাওয়ারই সম্ভাবনা।
অধীরবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘পর্যবেক্ষক হয়ে গৌরব বৈঠক করতে চেয়েছেন। আমরা ব্যবস্থা করছি।’’ আর গৌরব চাইছেন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সংগঠন নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের মত শুনতে।