তৃণমূলে গিয়ে মন বুঝছে রাহুল বাহিনী

বাংলায় সংগঠনের হাল শোচনীয়। একের পর এর বিধায়ক এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধি নাম লিখিয়েছেন শাসক দলে। কিন্তু সাংগঠনিক ভাবে এমন দুর্বল রাজ্যেও নজরদারিতে কোনও ঢিলেমি রাখছেন না রাহুল গাঁধী।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০০
Share:

ফাইল চিত্র।

পর্বতের কাছে দরবার করতে যাবেন মহম্মদ, এটাই কংগ্রেসে বহু কালের দস্তুর। কিন্তু এ বার পর্বতের দূতই যাচ্ছেন মহম্মদের কথা শুনতে!

Advertisement

বাংলায় সংগঠনের হাল শোচনীয়। একের পর এর বিধায়ক এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধি নাম লিখিয়েছেন শাসক দলে। কিন্তু সাংগঠনিক ভাবে এমন দুর্বল রাজ্যেও নজরদারিতে কোনও ঢিলেমি রাখছেন না রাহুল গাঁধী। তাঁর নিয়োজিত চার দূতের উপরে দায়িত্ব পড়েছে, জেলায় জেলায় ঘুরে একেবারে তৃণমূল স্তরের কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করার। নিচু তলার মনোভাব বুঝে তাঁরা এআইসিসি-কে অবহিত করবেন, যাতে প্রদেশ নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে আম কর্মীর কথা মিলিয়ে নিতে পারে হাইকম্যান্ড। রাজীব গাঁধী এক সময়ে বাংলায় দলের কাছে প্রশ্নমালা পাঠিয়ে মত নিতেন। আর রাহুলের দূতেরা যাচ্ছেন সশরীর।

এআইসিসি-র তরফে রাজ্যে দলের দায়িত্ব পাওয়ার পরে তরুণ নেতা গৌরব গগৈ কলকাতার কয়েকটি সাংগঠনিক জেলা এবং উত্তরবঙ্গে গিয়ে সেখানকার জেলাগুলির নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গিয়েছেন কর্মিসভাতেও। এ বার গৌরবকে সহায়তার জন্য নিযুক্ত এআইসিসি-র আরও তিন সম্পাদক শরৎ রাউত, বি পি সিংহ এবং মহম্মদ জাওয়াদের পালা। রাজ্যে এলাকা ভাগ করে দিয়ে তাঁদের প্রথম দফায় ৭ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর নির্ঘণ্ট বেঁধে দেওয়া হয়েছে জেলায় জেলায় ঘোরার। রাফাল-দুর্নীতির অভিযোগ ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি তাঁরাও কর্মীদের মত শুনবেন। তাঁদের এক জনের কথায়, ‘‘মাঠে-ময়দানে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের বক্তব্য জানতে চাইছে এআইসিসি।’’

Advertisement

প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা, সাংসদ, বিধায়ক ও শাখা সংগঠনের নেতাদের দিল্লিতে ডেকে সম্প্রতি আলোচনা সেরেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে দলের কৌশল কী হবে, তা-ই এখন প্রধান চর্চার বিষয়। মালদহে মৌসম বেনজির নুরেরা পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনে তৃণমূলকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই বিষয়ে এআইসিসি-র অবস্থান জানতে চেয়ে গৌরবকে চিঠি দিয়েছেন অনুপম ঘোষ, ঋজু ঘোষালের মতো তরুণ নেতারা। এআইসিসি-তে আলোচনা না করে এখনই এই নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ পর্যবেক্ষক গৌরব। তবে প্রদেশ কংগ্রেসকে তিনি বলেছেন, তারা এই বিষয়ে নিজেদের মত দিতেই পারে। প্রদেশ নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালানোর পাশাপাশিই জেলায় জেলায় সরাসরি সংযোগ গড়ে তুলতে চাইছেন গৌরবেরা।

এআইসিসি সূত্রের বক্তব্য, জোটের প্রশ্নে প্রদেশ নেতারা দু’ভাগ। এক পক্ষ বামেদের সঙ্গে থাকতে চান, অন্য একাংশ তৃণমূলের সঙ্গে যেতে চান। কিন্তু মাঠে-ময়দানে কর্মীরা যে হেতু শাসক দল ও পুলিশের ‘অত্যাচারে’ নাজেহাল, তাঁদের মনোভাব অনেক বেশি তৃণমূল-বিরোধী। গৌরব অবশ্য প্রকাশ্যে শুধু এইটুকুই বলছেন, ‘‘সংগঠনকে বাঁচানোই প্রথম লক্ষ্য। বাংলার নেতা-কর্মীদের যে কোনও দরকারে দিল্লি ছুটতে হবে না এখন। এআইসিসি-ই তাঁদের কাছে আসবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন