সল্টলেকে সংস্থার ডিরেক্টেরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেরোচ্ছেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র
শনিবার সকাল ১০টায় শিলংয়ে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে হবে কলকাতা পুলিশের নগরপালকে। কিন্তু তাঁকে জেরার আগের রাতেই সিবিআই কর্তা নাগেশ্বর রাওয়ের স্ত্রীর সঙ্গে সংযুক্ত কলকাতার একটি নন ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থার কলকাতা এবং সল্টলেকের অফিসে হানা দিল কলকাতা পুলিশের বিশেষ দল।
অ্যাঞ্জেলা মার্কেন্টাইল প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই সংস্থার কলকাতার ক্লাইভ রো এবং সল্টলেকে সিএ ব্লকের নথিভুক্ত ঠিকানায় শুক্রবার সন্ধ্যায় হানা দেয় কলকাতা পুলিশের প্রায় তিরিশ জনের একটি দল।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, ওই সংস্থার বিরুদ্ধে বেআইনি অর্থনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ জমা পড়েছে বউবাজার থানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হওয়া মামলার সূত্রেই ওই কোম্পানি এবং সংযুক্ত কোম্পানিতে হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা।
ক্লাইভ রো-এর এই অফিসেই হানা দেয় কলকাতা পুলিশের বিশেষ দল।
আরও পড়ুন: ম্যাডি বাবুই দুর্নীতির মাস্টার’, মোদীকে পাল্টা তোপ মমতার
এর আগে জাতীয় রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছিল যখন প্রকাশ্যে আসে যে ওই সংস্থার অন্যতম শেয়ার হোল্ডার সিবিআই কর্তা নাগেশ্বরের স্ত্রী মানেম সন্ধ্যা।
অভিযোগ, সিবিআই কর্তার স্ত্রী ২৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ওই সংস্থা থেকে। আবার পরবর্তীতে ২০১১-’১২ এবং ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষে আরওসি-র নথি থেকে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, মানেম সন্ধ্যা ওই সংস্থাকে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা পাল্টা ঋণ দিয়েছেন। যদিও নাগেশ্বর নিজে বার বার দাবি করেছিলেন যে ওই অর্থনৈতিক লেনদেনের মধ্যে কোনও কিছু বেআইনি নেই। অ্যাঞ্জেলার অন্যতম ডিরেক্টর প্রবীণ আগরওয়াল দাবি করেন, নাগেশ্বরের স্ত্রী তাঁর দীর্ঘদিনের পারিবারিক বন্ধু।
তবে কলকাতা পুলিশের এই তল্লাশি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজ্যের আইপিএস মহলের একাংশ। কারণ এ রাজ্যের অনেক পুলিশকর্তাই মনে করেন, এর আগে এক দফা ওই সংস্থায় কলকাতা পুলিশ হানা দেওয়ার কারণেই কলকাতার নগরপালের বাংলো পর্যন্ত পৌঁছেযাওয়ারনির্দেশদিয়েছিলেনখোদনাগেশ্বর।আরতারজেরধরেইশুক্রবারেরওইতল্লাশি।
শুক্রবার সল্টলেকের সিএ ব্লকে সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর প্রবীণ আগরওয়ালের বাড়িতে হানা দেওয়ার পাশাপাশি ক্লাইভ রো-তে জিবি সিকিউরিটি নামে একটি সংস্থায় হানা দেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। ওই একই ঠিকানায় অফিস অ্যাঞ্জেলা মার্কেন্টাইল প্রাইভেট লিমিটেডের। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই সংস্থার সঙ্গে যোগ রয়েছে জিবি সিকিউরিটিসের। সেই কারণেই হানা। তবে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে বলা হয়নি, ঠিক কী অভিযোগের তদন্ত তাঁরা করছেন। এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠীর সঙ্গে।
উদ্ধার হওয়া নথিতে শেয়ারহোল্ডার হিসাবে পাওয়া গিয়েছে নাগেশ্বরের স্ত্রী মানেম সন্ধ্যার নাম।
আরও পড়ুন: ক’টা ধর্না করবেন করুন, লুটেরাদের বাঁচাতে পারবেন না: মমতাকে চ্যালেঞ্জ মোদীর
তবে কলকাতা পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, শুধু নাগেশ্বরের স্ত্রী নন। ওই সংস্থার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন হয়েছে নাগেশ্বর রাওয়ের মেয়ের, এমন প্রমাণও তারা পেয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই কোম্পানি থেকে আইনের স্নাতক নাগেশ্বরের মেয়ে নিয়মিত বেতন পেতেন। কিন্তু কেন তিনি বেতন পেতেন তার কোনও নথি পাওয়া যায়নি।
ঋষি কুমার শুক্ল সিবিআইয়ের অধিকর্তা হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে পর্যন্ত নাগেশ্বর রাও সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তী অধিকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ২০১৬ সালে সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তার দায়িত্ব নেওয়ার আগে ওড়িশায় কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের আইজি পদে ছিলেন।
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)