COVID-19

COVID-19: ‘মাস্ক পরুন’, কোভিডে আক্রান্ত বাবাকে অকালে হারিয়ে আর্জি কবিতার

কবিতা জানিয়েছে, বোনও তার মতোই রায়গঞ্জের কৈলাসচন্দ্র রাধারাণী বিদ্যাপীঠে। তবে সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২২ ১৯:০৩
Share:

সংসারের দশা শুধরোতে এ বার টিউশন পড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছে (ডান দিকে) কবিতা পাল। —নিজস্ব চিত্র।

করোনার গ্রাসে অকালেই চলে গিয়েছেন বাবা। সংসারে একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে মাথায় হাত গোটা পরিবারের। কোনও রকমে দিনমজুরি করে সংসারের খরচ জোগাড় করছেন মা। নিজের পড়াশোনা চালাতে উঠেপড়ে লেগেছে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া কবিতা পাল। যদি একটা টিউশন জোটাতে পারে, তবে নিজের পাশাপাশি বোনও পড়াশোনা করতে পারবে। তবে ফের কোভিডের স্ফীতিতে সে আশাও যেন ধূসর হয়ে উঠছে। কোভিডে এত প্রাণ কেড়ে নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় আশপাশের মানুষজনের মধ্যে এখনও অনীহা। বাবাকে হারিয়ে যে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে তার পরিবার, সে কথা তাঁদের মনে করিয়ে দিতে চায় উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বাসিন্দা কবিতা। তাঁর আর্জি, ‘‘সতর্ক হোন। সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলুন। মাস্ক পড়ুন!’’

Advertisement

গত বছরের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কবিতার বাবা পেশায় টোটোচালক প্রভাত পাল। নিত্য অনটন মেটাতে মা দীপালি পালের রোজগারই এখন ভরসা। শহরের একটি বেসরকারি সংস্থায় রাঁধুনির কাজ করেন তিনি। বছর কয়েক আগে দীপালির বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। সংসারের খরচের মধ্যেই কবিতা ও ছোট মেয়ে পিউয়ের প়ড়াশোনারও খরচ সামলাতে হয়। তবে তাতেও আয়ব্যয়ের ফারাক থেকেই যাচ্ছে। সংসারের দশা শুধরোতে এ বার টিউশন পড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছে কবিতা। নিজের স্মার্টফোন নেই। তাই এক আত্মীয়ের কাছ থেকে তা ধার নিয়ে নেটমাধ্যমে আবেদন করেছে সে। যদি কোনও টিউশন জোটে।

কবিতা জানিয়েছে, বোনও তার মতোই রায়গঞ্জের কৈলাসচন্দ্র রাধারাণী বিদ্যাপীঠে। তবে সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘বড় হয়ে মায়ের পাশে দাড়িয়ে সংসারের হাল ধরতে চাই।’’ কিন্তু, করোনার সাম্প্রতিক স্ফীতিতে যেন সকলেরই প্রাণসংশয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রায়গঞ্জের দক্ষিণ গোয়ালপাড়ায় তাঁদের বাড়ির আশপাশে এখনও চূড়ান্ত বেপরোয়া মানুষজন। পথেঘাটে চরম অসচেতনতার ছবি। তা দেখে আতঙ্কিত কবিতা৷ তাঁর কথায়, ‘‘কোভিডের জেরে অসময়ে পিতৃবিয়োগের যন্ত্রণা যেন কেউ না পান। সংসারের চরম দৈন্যদশাও কারও জীবনে যেন না আসে।’’

Advertisement

আর্থিক অনটনে কবিতাদের লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে সে কথা শুনে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অনুপ কর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন