অযত্ন: শৌচাগারে এ ভাবেই রাখা চাদর-বালিশ। —নিজস্ব চিত্র
বাতানুকূল কামরায় জায়গা হয়নি। তাই যাত্রীদের বালিশ, চাদর ও কম্বল রাখা হয়েছে শৌচালয়ে। দূরপাল্লার ট্রেনে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে এবং যাত্রীরা তা নিয়ে ক্ষোভ-প্রতিবাদ জানাচ্ছেন মাঝেমধ্যেই। কিন্তু তাতে রেল-কর্তৃপক্ষের কোনও তাপ-উত্তাপ আছে, এমন প্রমাণ মিলছে না।
মঙ্গলবার পূর্ব রেলের উপাসনা এক্সপ্রেসে তৃতীয় শ্রেণির একটি বাতানুকূল কামরাতেও (বি-১) এমন ছবি ধরা পড়েছে। ওই কামরার যাত্রীরা জানান, বালিশ, চাদর অপরিষ্কার দেখে তাঁরা খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, তা রাখা ছিল ট্রেনের শৌচালয়ে। তাঁরা গিয়ে দেখেন, শৌচালয়ের নোংরা মেঝেতে বিভিন্ন শয্যাসামগ্রী ডাঁই করা রাখা রয়েছে। যাত্রীরা টিকিট পরীক্ষকের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি দায়িত্ব এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ।
ক্ষুব্ধ যাত্রীরা জানান, ওই টিকিট পরীক্ষক তাঁদের সোজা বলে দেন, ‘আমাদের কিছুই করার নেই। অভিযোগ করতে হলে রেলকর্তাদের কাছে যান।’ যাত্রীরা বলছেন, কামরায় জায়গা কম থাকতে পারে। তা বলে শৌচালয়ে চাদর-বালিশ রাখা হবে! এটা শুধু ঘেন্নার নয়, অস্বাস্থ্যকরও। তাঁদের পরামর্শ, শৌচালয়ের মেঝেতে অন্তত উঁচু করে একটা কাঠের পাটাতনের ব্যবস্থা করে তার উপরে বালিশ-চাদর রাখার ব্যবস্থা হোক। কিন্তু কে শোনা কার কথা!
ভারত জুড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযান চলছে। অথচ ট্রেনের মধ্যে পরিচ্ছন্নতার হাল কেন এমন হবে, প্রশ্ন তুলছেন যাত্রীরা। শুধু উপাসনা নয়, প্রায় রোজই কোনও না-কোনও এক্সপ্রেস বা মেল ট্রেনে এমন দৃশ্য দেখা যায় বলে জানান ভুক্তভোগীরা। যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা চুলোয় গিয়েছে অনেক দিন আগে। যাত্রী-সুরক্ষার ফাঁকফোকর বেআব্রু হয়ে পড়ছে যখন-তখন। এখন ন্যূনতম যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যেও নজর দিচ্ছেন না রেলকর্তারা। অথচ যাত্রী না-থাকলেও সেই ট্রেনে ‘ডায়নামিক ফেয়ার’-এর নিয়ম দেখিয়ে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ানো হচ্ছে টিকিটের দাম।
সামান্য চাদর-বালিশও পরিচ্ছন্ন জায়গায় রাখার ব্যবস্থা হবে না কেন?
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র সরাসরি জবাব তো দিলেনই না। উল্টে উপাসনা এক্সপ্রেসের ঘটনার পিছনে যাত্রীদের হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। তার পরে বলেন, ‘‘কী ঘটেছে, খোঁজ নিচ্ছি।’’