নোট বদলেও অভিযুক্ত পিনকন

জয়পুরের নিম্ন আদালতে রাজস্থান পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) যে এফআইআর দাখিল করেছে, তাতে বলা হয়েছে, গত বছর ৮ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে ১০০০ ও ৫০০ টাকার পুরনো নোট বাতিল করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক ও অত্রি মিত্র

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৯
Share:

শুধু টাকা তছরুপ নয়, আদালতে পিনকন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে বাতিল ১০০০ ও ৫০০ টাকার নোট বদলেরও অভিযোগ এনেছে রাজস্থান পুলিশ।

Advertisement

জয়পুরের নিম্ন আদালতে রাজস্থান পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) যে এফআইআর দাখিল করেছে, তাতে বলা হয়েছে, গত বছর ৮ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে ১০০০ ও ৫০০ টাকার পুরনো নোট বাতিল করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কিছু বিশেষ ক্ষেত্র ব্যতিরেকে পুরনো নোটে লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়। তদন্তকারীদের অভিযোগ, পিনকন গোষ্ঠীর পুরনো নোটে লেনদেনের অধিকার না-থাকলেও প্রায় গোটা নভেম্বর মাস ধরে তারা বাজার থেকে ওই নোট তুলেছে।

সাধারণ আমানতকারীদের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের একাধিক সাংসদ, এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, সরকারি আমলা, আইনজীবীদের মতো প্রভাবশালীদের কাছ থেকে এই পুরনো নোট নেওয়া হয়। কিন্তু সংস্থার খাতায়কলমে দেখানো হয়, যাবতীয় লেনদেন হয়েছে ৮ নভেম্বর বা তার আগে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে বেনামি লেনদেন হয়েছে বলেও অভিযোগ।

Advertisement

এফআইআর-এ আরও বলা হয়েছে, মূলত, এলআরএন ইউনিভার্স প্রডিউসার কোম্পানি লিমিটেডের বিভিন্ন স্কিমকে হাতিয়ার করে পিছনের তারিখে (ব্যাক ডেটে) এই কারবার চালানো হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, শুধু সংস্থার অজমেঢ় শাখাতেই ওই সময়ে ৪৫ কোটিরও বেশি টাকার পুরনো নোট জমা পড়েছিল। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৫০ কোটি টাকা বদলের হদিস মিলেছে।

এসওজি এই তথ্য কী করে জানল? গত বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু থেকে পিনকন-কর্ণধার মনোরঞ্জন রায়-সহ চার কর্তাকে গ্রেফতার করেছে এসওজি। কিন্তু বছর দেড়েক আগে এই বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে রাজস্থান পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন কিছু আমানতকারী। তখন থেকেই সংস্থার কর্তাদের উপর নজরদারি শুরু হয়। মনোরঞ্জন ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ফোন কল রেকর্ড করা শুরু হয়। সব মিলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ মিনিট ফোন কল রেকর্ড করে এসওজি। এ ছাড়াও পিনকন গোষ্ঠীর কর্তাদের করা কিছু ই-মেল হাতে এসেছে। সেই সব সূত্রেই এই তথ্য মিলেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।

কলকাতায় পিনকন কর্তার দু’টি অফিস রয়েছে। অর্থলগ্নি সংস্থার অফিসের ঠিকানা ৩৭, শেক্সপিয়র সরণি। আর মদ প্রস্তুতকারক সংস্থার অফিস রয়েছে ৭, রেডক্রস প্লেসে। এই দ্বিতীয় অফিসই নোট বদল কারবারের মূল কেন্দ্র ছিল বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। তাঁদের মতে, এখান থেকেই বাতিল নোট পাঠানো হয়েছিল গোটা দেশে সংস্থার বিভিন্ন অফিসে। সেখানে পুরনো তারিখে আমানত জমার নথি তৈরি করার পরে টাকা ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়।

তদন্তকারীদের দাবি, পিনকনের ধৃত চার কর্তাকে ফোনের রেকর্ডিং শোনানো হয়েছে। এবং জেরার মুখে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁরা এর সত্যতা কবুল করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন