Baisakhi Banerjee

শোভনের হাত ছেড়ে বৈশাখীকে বেহালায় একা ঢোকার চ্যালেঞ্জ জানালেন রত্না

"নবদম্পতি সেজে সব জায়গায় যাচ্ছেন । মানুষ হাসছেন।ব্যালটে এর প্রতিফলন বিজেপি দেখবে।"

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:৩৬
Share:

রত্না চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

স্বামী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে একা বেহালায় আসার জন্য সটান চ্যালেঞ্জ করলেন শোভনের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘উনি (বৈশাখী) শোভনের সঙ্গে আসছেন বলে হয়তো বেহালার মানুষ ওঁকে কিছু বলবেন না। কিন্তু একবার শোভন চট্টোপাধ্যায়ের হাত ছেড়ে একা বেহালায় ঢুকে দেখান! দেখবেন বেহালার মানুষ ওঁকে কী করে!’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিজেপি-র হয়ে বেহালায় প্রচারে যাচ্ছেন শোভন-বৈশাখী। তাঁদের মিছিলের আগেই বেহালায় একটি পদযাত্রা করেছে তৃণমূল। যার নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্যের অন্যতম মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই মিছিলেই যোগ দিয়েছিলেন শোভনের স্ত্রী রত্না। সোমবার পর্যন্ত শোভন-বৈশাখীর বেহালায় আগমনের বিষয়ে নিরুত্তাপ ছিলেন রত্না। কিন্তু মঙ্গলবার মিছিলের আগে তিনি নীরবতা ভাঙেন এবং শোভন-বৈশাখীকে তীব্র কটাক্ষ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁরা মুখে মেক-আপ, গায়ে গয়না পরে নববিবাহিত দম্পতি সেজে সব জায়গায় যাচ্ছেন। বেহালাতেও আসছেন। এতে বেহালার মানুষ হাসছেন। হয়তো ওঁরা এখন শোভনবাবুকে কিছু বলবেন না। কিন্তু ব্যালটে এর প্রতিফলন বিজেপি দেখতে পাবে। বেহালা পূর্ব এবং পশ্চিম, দু’টি কেন্দ্রেই এর ফল দেখতে পাবে বিজেপি।’’

একই কথা বলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রধান প্রশাসক ফিরহাদ (ববি) হাকিম। তাঁরও কথায়, ‘‘বেহালার মানুষ এটা ভাল ভাবে নেবেন না। ওর বেহালায় একটা প্রভাব ছিল। আমি যেমন চেতলার ছেলে। সেখানে আমায় সকলে চেনেন, জানেন, ভালবাসেন। কিন্তু শোভন বেহালার মানুষের কথা ভাবেনি। তাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে। ও বুঝতে পারছে না, বিজেপি ওকে ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলে দেবে।’’

Advertisement

ঘটনাচক্রে, শোভন নিজে এখনও বেহালা পূর্বের বিধায়ক। তিনি ওই এলাকার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও বটে। যদিও গত সাড়ে তিন বছর শোভন বেহালামুখো হননি। সেই কথাটিই মঙ্গলবার আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন রত্না। তাঁর কথায়, ‘‘সাড়ে তিন বছর উনি বেহালার দিকে ফিরেও তাকাননি। আর এখন আসছেন পদযাত্রা করতে!’’ শোভন-বৈশাখীর পদযাত্রায় কি কোনও ফল মিলবে? রত্নার জবাব, ‘‘উনি ওই মহিলাকে নিয়ে যত রাস্তায় নামবেন, তৃণমূলের ভোট তত বাড়বে। একজন মানুষ সন্তানদের ভুলে পরস্ত্রীকে নিয়ে ঘর করছেন। এসব বাংলায় চলে না। বাংলার মানুষ কোনওদিন এসব মেনে নেননি। নেবেনও না।’’ এর পরেই বৈশাখীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছেন রত্না। তাঁর কথায়, ‘‘উনি তো আসছেন শোভনের হাত ধরে। হয়ত সেই কারণে এখানকার মানুষ ওঁকে কিছু বলবেন না। কিন্তু একবার শোভনবাবুর হাত ছেড়ে একা ঢুকে দেখুন! দেখুন, মানুষ ওঁকে কী করে!’’

রত্না আরও জানাচ্ছেন, কলকাতার পুরভোটে তিনি শোভনের ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডেই দাঁড়াবেন। তাঁর দাবি, ‘‘শোভন এই ওয়ার্ডে দাঁড়াবেন বলে মনে হয় না। দাঁড়ালে মুখোমুখি লড়াই হবে এবং ওঁর জামানত জব্দ হবে! কিন্তু উনি গত সাড়ে তিন বছর ধরে এই ওয়ার্ডের মানুষের দিকে ফিরেও তাকাননি। শুধু নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত থেকেছেন। মানুষ কি সেগুলো সব ভুলে গিয়েছেন?’’

উল্লেখ্য, শোভন বেহালা ছাড়ার পর তাঁর ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডটি দেখভাল করার দায়িত্ব রত্নাকেই দিয়েছিল তৃণমূল। সেই থেকেই রত্না নিজেকে পরবর্তী ভোটের জন্য তৈরি করছেন। সব পরিকল্পনামতো চললে রত্নাই সম্ভবত ওই ওয়ার্ডে পুরভোটে লড়বেন। তবে এখন দেখার, শোভন ওই ওয়ার্ড থেকে পুরভোটে লড়েন কি না। বা বিধানসভা ভোটেও তিনি নিজের পুরনো কেন্দ্র থেকে লড়েন কি না। এমনিতে যাঁরা তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন, তাঁরা সকলেই নিজের নিজের কেন্দ্র থেকে বিধানসভা ভোটে লড়তে আগ্রহী। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন অমিত শাহ। তেমনই জানাচ্ছেন রাজ্য বিজেপি-র নেতারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement