SSC Recruitment case

ববিতার মতো ভুল হবে না তো? প্রশ্ন শুনে অনামিকার স্বামী শুভজিৎ কী বললেন আনন্দবাজার অনলাইনকে

অঙ্কিতা অধিকারী চাকরি খোয়ানোর পর সেই চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। আদালতে রায়ে এক বছরের মধ্যে চাকরি খোয়ালেন ববিতা। তাঁর পরিবর্তে চাকরি পেলেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা বিশ্বাস রায়।

Advertisement

সারমিন বেগম

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৩ ১৫:১২
Share:

চাকরি পাওয়ার লড়াইয়ে জয়। মুখে অনাবিল হাসি। ববিতার চাকরি পেলেন অনামিকা বিশ্বাস রায়। নিজস্ব চিত্র।

কাজের জন্য তিনি এখন মুম্বইয়ে রয়েছেন। কিন্তু খবরটা পেতে দেরি হয়নি তাঁর। কয়েক ঘণ্টা আগেই স্ত্রীর সুখবর পেয়েছেন। প্রত্যাশিত ভাবেই তিনি খুশি। মুম্বই থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে এমনটাই জানিয়েছেন অনামিকার স্বামী শুভজিৎ বিশ্বাস।

Advertisement

শুভজিতের কথায়, “খুবই আনন্দ হচ্ছে। এই লড়াইয়ে প্রথম থেকেই অনামিকার পাশে ছিলাম। ও চাকরি পাওয়ায় আমি খুব খুশি।” অঙ্কিতা অধিকারীর বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলেন ববিতা সরকার। সেই মামলায় জয় হয়েছিল ববিতার। যে চাকরিটি অঙ্কিতা করছিলেন, সেটি তাঁর প্রাপ্য, এমনই দাবি তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ববিতা। শেষমেশ অঙ্কিতার বিরুদ্ধেই রায় যায়। সেই চাকরি পান ববিতা।

তার পর প্রায় এক বছর কেটে গিয়েছে। কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বিদ্যালয়ে অঙ্কিতার জায়গায় শিক্ষকতা শুরু করেন ববিতা। মামলায় জিতে তাঁর জীবনের একটা নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই অধ্যায় শেষ হতে বেশি সময় লাগল না। এক বছরের মধ্যেই ববিতার মুখের হাসি মিলিয়ে গেল। যে অঙ্কিতার বিরুদ্ধে মামলা লড়ে ববিতা চাকরি পেয়েছিলেন, এ বার সেই একই পরিণতি হল ববিতারও। আর সেটা হল তৃতীয় এক দাবিদারের আবির্ভাবে।

Advertisement

সেই তৃতীয় দাবিদার আর কেউ নন, অনামিকা বিশ্বাস রায়। ববিতাও যে ওই চাকরির আসল ‘হকদার’ নন, সেটা প্রমাণ করতেই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা। নথিপত্র জোগাড় করা, তিনিই যে এই চাকরির আসল ‘হকদার’, তা প্রমাণে শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা দৌড়ঝাঁপ করেছেন। এই লড়াইয়ে সব সময়ের জন্য পাশে পেয়েছেন স্বামী শুভজিৎকে। তাই স্ত্রীর জয়ে তিনিও যে সমান ভাবে শামিল হতে পারছেন, এটাই সবচেয়ে আনন্দের বিষয় বলে জানিয়েছেন শুভজিৎ।

অঙ্কিতার হাতছাড়া হয়েছিল যে চাকরি, সেই চাকরি গিয়েছিল ববিতার হাতে। প্রায় এক বছরের মধ্যেই সেই চাকরি খোয়ালেন ববিতা। এ বার সেই চাকরি গেল অনামিকার হাতে। এই লড়াইয়ে জিতে যে অনাবিল হাসি ধরা পড়েছে সেটা মিলিয়ে যাবে না তো? অঙ্কিতা বা ববিতার মতো পরিণতি হবে না তো শেষ পর্যন্ত? এ প্রসঙ্গে অনামিকার স্বামী বলেন, “এই পরিণতি হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। কারণ অনামিকা পরীক্ষায় যে নম্বর পেয়েছেন, সেটি স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে ভাল করে খতিয়ে দেখা হয়েছে। এ ছাড়াও আদালত থেকেই সেই নম্বর ‘ক্রসচেক’ করা হয়েছে। ববিতার ক্ষেত্রে যে ভুল হয়েছিল, অনামিকার ক্ষেত্রে সেই ভুলের কোনও অবকাশ নেই।”

অন্য দিকে, অনামিকা জানান, তিনি যে চাকরি পাবেন, সে বিষয়ে প্রথম থেকেই আশাবাদী ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কখনও আশাহত হইনি। জানতাম, চাকরিটা আমি পাবই। চাকরির মেধাতালিকায় আমার নাম এবং ববিতার নাম পর পর ছিল। আমি ২১ নম্বরে ছিলাম। ববিতা ছিলেন ২০-তে। অঙ্কিতা আসার পর আমাদের র‌্যাঙ্ক পিছিয়ে যায়। অঙ্কিতার চাকরি বাতিলের পর তা মেধাতালিকা অনুযায়ী পান ববিতা। কিন্তু আমি পরে দেখি, ববিতার নম্বর আসলে আমার চেয়ে কম। তিনি ২ নম্বর কম পেয়েছিলেন। তাই চাকরিটা আমারই পাওয়ার কথা। তার পর আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম।’’

রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতার নিয়োগে কারচুপির অভিযোগে তাঁর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বেতনও ফেরাতে হয় আদালতকে। সেই বেতনের পুরো টাকাই পেয়েছিলেন ববিতা। কিন্তু অনামিকার মামলার পর দেখা যায়, ববিতার নিয়োগে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে। তার পরই আদালত জানিয়ে দেয়, ববিতা নন, চাকরির আসল ‘হকদার’ অনামিকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন