রোদ উঠলেও পর্যটকদের ভোগান্তি চলছেই

টানা তিন দিন বৃষ্টির পর রোদের দেখা মিললেও, ছন্দে ফিরল না পাহাড়-সমতল। লাগাতার দুর্যোগে বিভিন্ন রাস্তায় ধস। দীর্ঘ যানজটে পর্যটকদের ভোগান্তি অব্যাহত রইল শুক্রবারও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩১
Share:

বৃষ্টি থামতেই জমজমাট দার্জিলিং। ছবি: রবিন রাই।

টানা তিন দিন বৃষ্টির পর রোদের দেখা মিললেও, ছন্দে ফিরল না পাহাড়-সমতল। লাগাতার দুর্যোগে বিভিন্ন রাস্তায় ধস। দীর্ঘ যানজটে পর্যটকদের ভোগান্তি অব্যাহত রইল শুক্রবারও।

Advertisement

এ দিন সকাল থেকে আবহাওয়া ছিল ঝলমলে। নতুন করে বড়সড় ধসের খবর মেলেনি। কিন্তু বিভিন্ন রাস্তা ধসে বেহাল হওয়ায় নাকাল হতে হল পর্যটকদের। কেউ গ্যাংটক থেকে সকালে রওনা দিয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছলেন রাতে, কেউ বা সকালে শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে রাত দশটাতেও গ্যাংটকে পৌঁছতে পারেননি। সিকিমে যাওয়ার পথে দীর্ঘ সময় আটকে থেকে কলকাতার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দলের সদস্যরা বিষয়টি জানালেন উত্তরবঙ্গের এডিজি তথা আইজি এন রমেশবাবুকে। পুলিশ সূত্রের খবর, এর পরে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়ে যানজট সামলাতে নামে পুলিশ।

পর্যটকদের অভিযোগ, সকাল থেকে ট্রাফিক পুলিশের নজরদারির অভাবে মাত্রা ছাড়ায় যানজটের দুর্ভোগ। গত বুধবার এবং বৃহস্পতিবার যে এলাকাগুলিতে যানজট হয়েছিল এ দিন সে সব জায়গাতেও কোনও নজরদারি ছিল না বলে অভিযোগ। সরু পাকদণ্ডি রাস্তাতেও একই মুখে গাড়ির লাইন পড়ে যায়। ফলে বেশ কিছু রাস্তায় যানচলাচল থমকে যায়। দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব আশ্বাস দিয়েছেন, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এ দিন কেন যানজট হল তা খতিয়ে দেখা হবে বলে দাবি করেছেন জেলাশাসক।

Advertisement

শুক্রবার সকালে রোদের দেখা মেলায় গত দু’দিনের অনিশ্চয়তা কাটিয়ে হাসি ফোটে পর্যটকদের মুখে। যদিও, রাস্তায় বের হয়েই সেই হাসি উধাও হয়ে যায়। কালিঝোরা থেকে বিরিকধারা, ২৯ মাইল এলাকায় সকাল থেকে শুরু হয়ে যানজট চলেছে গভীর রাত পর্যন্ত। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিরিকধারার কাছে জাতীয় সড়কের বেশ কিছু এলাকা বসে যায়। যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পূর্ত দফতর এবং সেনার তরফে রাস্তা সংস্কারের পরে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। এ দিন রাস্তায় নতুন করে কোনও সমস্যা হয়নি বলে পূর্ত দফতরের তরফে দাবি করা হয়েছে। তারপরেও কেন যানজট হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রশাসনের আধিকারিকরাই। অভিযোগ, এ দিন সকাল দশটার পরেই বিরিকধারায় যানজট শুরু হয়। সেই জট ছড়িয়ে পড়ে একদিকে কালিঝোরা সেবক পর্যন্ত, অন্যদিকে কালিম্পং পর্যন্ত। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে এমন যানজটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগ।

গ্যাংটক থেকে শিলিগুড়ি পৌঁছতে পুরো দিন কাবার হয়ে যায় পর্যটকদের। চরম দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয় শিশু মহিলাদের। পাহাড়ি রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ থেকে জল ও খাবার পাননি পর্যটকরা। মেলেনি শৌচাগারও। কলকাতার বাসিন্দা শতরূপা দত্তের কথায়, ‘‘সেবক থেকে কালিম্পঙ কমবেশি দু’ঘণ্টার রাস্তা পেরোতে সময় লেগেছে আট ঘণ্টা। সঙ্গে বাচ্চা ছিল। সারা রাস্তায় বাচ্চার কোনও খাবার পাইনি। কী যন্ত্রণায় ভুগতে হয়েছে, তা বলে বোঝানো যাবে না।’’

ধসের কারণে কিছু রাস্তায় গাড়ির গতি কমানো হয়েছে। তার জেরে যানজটের আশঙ্কা ছিলই। এই পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল। তা না হওয়াতেই এ দিনও যানজট থেকে রেহাই পাননি পর্যটকরা। জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েই বিভিন্ন রাস্তায় ট্র্যাফিক পুলিশ কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল। রাতভর রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন