অসুস্থ প্রণব কুণ্ডু। — নিজস্ব চিত্র
মাস খানেক আগে পড়ে গিয়ে হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা প্রণবকুমার কুণ্ডু। পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত তিনি। উঠে বসার ক্ষমতাটুকুও নেই। সই করতে পারেন না আর। চিকিৎসকেরা অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেছেন। কিন্তু স্রেফ টাকার অভাবে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে পারছেন না ছেলে পরাগ। বাবার চিকিৎসার জন্য তাঁর পেনশনের টাকা তুলতে চার দিন ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়েও টাকা পাননি তিনি।
প্রণববাবু জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন কর্মী। তাঁর ছেলে পরাগবাবু জানান, তাঁর একটি ফোটোগ্রাফির স্টুডিও থাকলেও বাবার পেনশনেই সংসার চলে। গত মাসেও তাঁর বাবা নিজেই ব্যাঙ্কের কাগজপত্রে সই করেছিলেন। পরাগবাবু জানান, চলতি মাসে পেনশনের টাকা তোলার জন্য তিনি ইউকো ব্যাঙ্কের শিবপুর শাখায় গিয়েছিলেন। বাবার অসুস্থতার কথা বলার পর ব্যাঙ্কের কর্তারা তাঁকে প্রথমে টিপ ছাপ দেওয়া টাকা তোলার ফর্ম ও আবেদন-সহ চিকিৎসকের শংসাপত্র আনতে বলেন।
পরাগবাবু বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের কথা মতো সব কিছু নিয়ে যাই। কিন্তু জানানো হয়, ৮ হাজার টাকার বেশি দেওয়া যাবে না। সেই টাকা দেওয়া হবে ব্যাঙ্কের লোক বাড়ি গিয়ে বিষয়টা খতিয়ে দেখার পর।’’ তিনি জানান, ব্যাঙ্কের কর্মীকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্যাঙ্কে গিয়ে অপেক্ষা করেছেন। কিন্তু চার দিন পরেও ব্যাঙ্ক কাউকে পাঠায়নি।
বাবার পেনশনের টাকা পাচ্ছেন না কেন ছেলে? ইউকো ব্যাঙ্কের শিবপুর শাখার ম্যানেজার আশুতোষ সিকদার বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে টাকা থাকলে দিতে অসুবিধা নেই। কিন্তু টাকার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও আমরা জানিয়েছি ওই গ্রাহকের বাড়িতে ব্যাঙ্কের লোক যাবে। তার পরেই টাকা দেওয়া হবে।’’