তালাবন্ধ: ঘরে সাঁটা বিজ্ঞপ্তি।
সেই মুখ, গাল ভর্তি দাড়ি। পরনে টি শার্ট ও লুঙ্গি। আর ডান হাত কব্জির নীচ থেকে কাটা।
সংবাদপত্রে ছবিটা দেখে সাত সকালে বেলডাঙা চমকে উঠেছিল, ‘আরে, এ তো সেই হাতকাটা নাসিরুল্লা গো!’
কোন নাসিরুল্লা?
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) জানাচ্ছে, সোহেল মেহফুজ ওরফে হাতকাটা নাসিরুল্লা। সাকিন বাংলাদেশ। সেই নাকি পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি-র স্থপতি। রাজ্যে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত এই নাসিরুল্লাকে গ্রেফতার করার কথা শনিবার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।
খাগড়াগড় সুতোয় নাম জড়িয়েছিল বেলডাঙার। কারণ, খাগড়াগড় বিস্ফোরণে নিহত শাকিল গাজি করিমপুরের বারবাকপুরে রাজিয়া বিবিকে বিয়ে করে। তারপর সে ডেরা বাঁধে বেলডাঙায়। সেখানে সে একটি বোরখার কারখানা চালাত। বড়ুয়া মোড়ে তার দোকানও ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, শাকিলের ডান হাত ছিল এই হাতকাটা নাসিরুল্লা। নাসিরুল্লাও বেলডাঙার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাটপাড়ায় ভাড়া থাকত। খাগড়গড় কাণ্ডের পরে সে-ও বেপাত্তা হয়ে যায়। পরে পুলিশ ও এনআইএ এসে তার সেই ভাড়া নেওয়া ঘরটিও ‘সিল’ করে দেয়।
খাগড়াগড় কাণ্ডের পরেই বেলডাঙা জানতে পারে, নাসিরুল্লার আসল পরিচয়। এ দিন ধরা পড়ার খবরে যেন স্বস্তি পেয়েছে মুর্শিদাবাদের এই শহর। বেলডাঙার ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা জানতেন নাসিরুল্লা কাপড়ের ব্যবসা করে। তার ডান হাত যে কাটা তা-ও তাঁরা জানতে পারেন অনেক পরে। কারণ, নাসিরুল্লা বেশিরভাগ সময় ডান হাত পকেটে ঢুকিয়ে রাখত।
যে বাড়িতে নাসিরুল্লা থাকত সেই বাড়ির মালিক আনসার শেখ বলছেন, ‘‘নাসিরুল্লা যে ওর নাম তাই তো জানতাম না। আসলে ও কারও সঙ্গে সে ভাবে মিশত না। তবে শেষ পর্যন্ত ও যে ধরা পড়েছে সেটাই স্বস্তির।’’ কিন্তু কারও পরিচয় না জেনেই ঘর ভাড়া দিয়েছিলেন কেন? আনসার বলছেন, ‘‘ঘাট হয়েছে মশাই, ওই ভুল আর করছি না।’’
কিন্তু এখনও কি পুরসভা জানে কার ঘরে কে বসত করে?
বেলডাঙা পুরসভার পুরপ্রধান ভরত ঝাওর বলেন, ‘‘আমরা এ বিষয়ে লোকজনকে সচেতন করছি।’’