ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, গোবরডাঙায় বন্ধ হাসপাতালটি আর খোলা হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে নামলেন এলাকার মানুষ। পাশে এসে দাঁড়ালেন তৃণমূলের এলাকার নেতারাও। বৃহস্পতিবার গোবরডাঙা স্টেশনে এই অভিযানে ছিলেন শহর তৃণমূল সভাপতি সমীর নন্দী। হাসপাতাল নিয়ে জনমত গঠনে গোবরডাঙা স্টেশনে ‘পৌর উন্নয়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে জনমত গঠনে সই সংগ্রহ অভিযানে ছিলেন তিনি।
হাসপাতাল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর ক্ষোভ, হতাশায় ফুঁসছে গোবরডাঙা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ক্ষোভ জানাচ্ছেন বহু মানুষ। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ। এক নেতার কথায়, ‘‘প্রতিবাদে না নেমে উপায় নেই। আগে তো আমরা নিজেদের পিঠ বাঁচব। তার পর তো রাজনীতি।’’ স্থানীয় যুব নেতা বলেন, ‘‘পৌর উন্নয়ন পরিষদের ব্যানারে এই নিয়ে প্রতিবাদ করব।’’
গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদ-এর তরফে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গোবরডাঙা প্ল্যাটফর্মে হাসপাতালের জন্য সই সংগ্রহ শুরু হয়। তাতে সংগঠনের নেতাদের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। পরিষদের সভাপতি প্রবীর মজুমদার বলেছেন, ‘‘এক সপ্তাহ ধরে মানুষের কাছে যাব। সই সংগ্রহ করে তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য।’’
মঙ্গলবার ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে হাসপাতাল তৈরির বিষয় তোলায় গোবরডাঙা পুরসভার প্রধান সুভাষ দত্তকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘না-চাইতেই অনেক পেয়েছেন। এত চাইতে নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রীর ওই জবাবে মর্মাহত সুভাষ দত্ত তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে এ নিয়ে ক্ষোভ জানান। তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, গোবরডাঙা পুর এলাকার প্রধান ৩টি সমস্যার একটিরও সমাধান হয়নি। হাসপাতাল, বাস পরিষেবা ও পৃথক থানা—কিছুই হয়নি। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, তা হলে, পাওয়ার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে!
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার সময়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি, রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কেন সদর্থক কোনও ভূমিকা নিলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকার মানুষ। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘কাছেই হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতাল আছে, ঠাকুরনগরে চাঁদপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল। কল্যাণীতে এইমস হচ্ছে। গোবরডাঙার মানুষকে বলব সিদ্ধান্ত মেনে নিন। হাবরা হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।’’ জ্যোতিপ্রিয়বাবুর এই কথায় আগুনে ঘি পড়েছে। তৃণমূল নেতাদের একাংশ বলছেন, গাইঘাটার বিধায়ক থাকাকালীন তিনিই তো ওই হাসপাতালটি নিয়ে সরব ছিলেন। এখন উল্টো সুর কেন?