Rishra Clash

রিষড়ায় অশান্তি নিয়ে চিঠি শাহ ও আনন্দকে, ভোররাতে হাসপাতাল থেকে লিখলেন আক্রান্ত বিধায়ক

রিষড়ায় বিজেপির মিছিলে অশান্তির মাঝে আহত হন পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান। তিনি হাসপাতালে ভর্তি। সেখান থেকেই কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৪২
Share:

রিষড়ায় বিজেপির মিছিলে অশান্তি। নিজস্ব চিত্র।

রিষড়ায় অশান্তির ঘটনায় অভিযোগ জানিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিলেন আক্রান্ত বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ। ভোররাতে হাসপাতাল থেকেই চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। বাংলায় অশান্তির পরিবেশের বর্ণনা দিয়ে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

Advertisement

রবিবার রিষড়ায় বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই মিছিল সন্ধ্যাবাজার এলাকায় পৌঁছতেই অশান্তি শুরু হয়। অভিযোগ, পরিকল্পনামাফিক আগে থেকেই সেখানে মিছিলে বাধা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন এক দল দুষ্কৃতী। মিছিলে তাঁরা ঢিল ছোড়েন। এমনকি, বোমাবাজি এবং আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। সংঘর্ষে আহত হন পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান।

রবিবারের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে চিঠিতে বিমান জানিয়েছেন, মিছিলে অশান্তি এবং আক্রমণের সময় রাজ্যের পুলিশ ‘নীরব দর্শক’-এর ভূমিকা পালন করছিল। পরে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদেরই নিরাপত্তার নামে আটক করে তারা। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার ভোররাতে হাসপাতাল থেকেই চিঠি পাঠান আক্রান্ত বিধায়ক। তিনি রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উভয়ের কাছেই কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ এবং রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আবেদন জানিয়েছেন।

Advertisement

বিজেপি সূত্রে খবর, রবিবারের সংঘর্ষে বিমানের কানে চোট লেগেছে। তাঁকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং রাজ্যপালকে চিঠি লিখলেন তিনি।

এর আগে এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তিনিও পুলিশের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় পুলি‌শের বিরুদ্ধে নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন দিলীপও। তাঁর দাবি, এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল না। দিলীপের কথায়, ‘‘রিষড়ার ঘটনা ঘটল কী করে? পুলিশ কেন আগাম ব্যবস্থা নিল না? পুলিশের আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল।’’

তৃণমূল অবশ্য বিজেপির দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘‘দিলীপবাবুরা কী বলছেন, আমি জানি না। আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ওখানে পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা হয়েছিল। নিরাপত্তায় কোনও খামতি ছিল না। মিছিল করতে বহিরাগতদের আনা হয়েছিল। যাঁরা এলাকার বাসিন্দা নন, তাঁদের নিয়ে মিছিল করতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। এর দায় পুলিশের উপর চাপানো ঠিক হবে না।’’ বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। তিনি বলেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে গন্ডগোল করার জন্য প্ররোচনা দিতে বিজেপি এই ঘটনা ঘটায়। এঁদের এক একটাকে ধরে কড়া আইনি পদক্ষেপ করতে হবে।’’

রিষড়ায় অশান্তির ঘটনা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপালও। রাজভবন সূত্রে খবর, এই ঘটনায় উদ্বেগের কথা জানিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেছিলেন। তার পর একটি বিবৃতি দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘গুন্ডা এবং দুর্বৃত্তদের লৌহকঠিন হাতে দমন করা হবে। গণতন্ত্রকে বিপথে চালিত করা যাবে না।’’

রিষড়ায় সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে রিষড়া থানার ওসি পিয়ালি বিশ্বাস-সহ বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন বলে খবর। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি জানান, এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে রিষড়া এবং মাহেশ এলাকায় রবিবার রাত ১০টা থেকে সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement