বিশালাকার: রাস্তা জুড়ে সেই ৫৪ চাকার ট্রাক। শনিবার মুরারইয়ে। নিজস্ব চিত্র
বাজারে ভিড় নেই, রাস্তায় বাস, ট্রেকার বা যাত্রীবাহী গাড়ির দেখা নেই। অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত নেই।
শনিবার সকাল দশটা থেকে বেলা দুটো পর্যন্ত মুরারইয়ের রাস্তা কার্যত এমন ভাবেই দখল করে রাখল ঝাড়খণ্ড থেকে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিগামী ৫৪ চাকার একটি ট্রাক। এনটিপিসি’র (ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন লিমেডিটেড) টারবাইন নিয়ে যাওয়া ট্রাকটিকে দেখতে বেলা ১১টা নাগাদ মুরারই বাজারে, আশপাশের রাস্তায় ভিড় উপচে পড়ে। মোবাইল হাতে বহু মানুষ ছবি তোলেন ট্রাকটির। অতি উৎসাহীদের ভিড়ের মধ্যেই ট্রাকের সঙ্গে সেলফি তুলতে দেখা যায়। ধীর গতিতে চলা ট্রাকটির পথে যাতে কোনও বাধা না থাকে তার জন্য কড়া পুলিশি নজরদারিও ছিল। ইসিএল, রেল ও প্রশাসনের কর্তারাই ট্রাক চালককে কোন পথে কেমন ভাবে যাবেন তার নির্দেশ দিয়েছেন।
যদিও রাজগ্রাম-বোলপুর সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় মুরারই রেলগেটে গিয়ে ট্রাকটি আটকে যায়। ওভারহেড তার থাকায় উঁচু ও ভারী গাড়ি যাতে রেলগেট পার না হতে পারে তার জন্য লোহার বিম থাকে রেলগেটগুলিতে। আর তাতেই আটকে যায় ট্রাকটি। রেল কর্তৃপক্ষ ক্রেন দিয়ে লোহার বিম খোলার পরে ট্রাকটি আস্তে আস্তে মুরারই ছাড়িয়ে পাইকর হয়ে ওমরপুর পৌঁছোয়।
মুরারই ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দিলীপ পিঁপড়া বলেন, ‘‘এক ট্রাকের জন্য বাজারই জমল না মুরারইতে। কোনও যানবাহনই বাজারে ঢুকতে পারেনি। গ্রাম থেকে বাজারে লোকজন আসতে না পারায় বেচাকেনা ছেড়ে সবাই রাস্তায় ভিড় করল। প্রশাসনতো রাতেও ট্রাকটিকে নিয়ে যেতে পারত।’’
এদিকে রাস্তার ধারে ভিড়ের সুযোগ নিয়ে ভাদীস্বরে কাঁসার দোকানে চুরি করতে ঢুকে জনতার হাতে ধরা পড়ে এক চোর। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে। অন্য দিকে, গাড়ি চলাচল করতে না পারায় মুরারই স্টেশনে অসুস্থ ব্যক্তিকে কোলে তুলে নিয়েই হাসপাতালের দিকে হাঁটা দেন তাঁর আত্মীয় পরিজনেরা।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাস্তা দিয়ে এই ট্রাক গেলে নিরাপত্তার ও যানজটের কারণে অন্য গাড়ি চলাচল করতে পারবে না তা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। নির্বিঘ্নেই মুরারইয়ের নির্ধারিত পথ পাড়ি দিয়েছে দানব ট্রাকটি।