রোশন কেন রাজনাথের কাছে, প্রশ্ন রাজ্যের

সোমবার নবান্নে বৈঠকের পরে বিনয় তামাঙ্গ জানিয়েছিলেন, তাঁরা দিল্লি যাবেন কেন্দ্রীয় কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে। এই নিয়ে রাজধানীতে মোর্চা শিবিরে আলোচনা শুরু হয়ে যায় (যদিও তামাঙ্গ এ দিন দিল্লিতে কারও সঙ্গে দেখা করতে পেরেছেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৮
Share:

সাক্ষাৎ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রোশন গিরি ও এস এস অহলুওয়ালিয়া।

বিনয় তামাঙ্গরা দিল্লি এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন— এই জল্পনা শুনে মঙ্গলবার তড়িঘড়ি রাজনাথ সিংহের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন রোশন গিরি-সহ মোর্চার গুরুঙ্গপন্থী নেতারা। পরে সেই বৈঠকের ছবি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে প্রকাশ করা হয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকারের প্রশ্ন, রোশন গিরির নামে যেখানে ইউএপিএ ধারায় মামলা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেখা করেন কী ভাবে? খবর জেনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজনাথের সঙ্গে কথা বলতে চান সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাত পর্যন্ত যোগাযোগ হয়নি।

Advertisement

সোমবার নবান্নে বৈঠকের পরে বিনয় তামাঙ্গ জানিয়েছিলেন, তাঁরা দিল্লি যাবেন কেন্দ্রীয় কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে। এই নিয়ে রাজধানীতে মোর্চা শিবিরে আলোচনা শুরু হয়ে যায় (যদিও তামাঙ্গ এ দিন দিল্লিতে কারও সঙ্গে দেখা করতে পেরেছেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। পাহাড়ে ফেরার সময়ে নিজেও বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি)। তামাঙ্গেরা এসে বিমল গুরুঙ্গের বিরোধিতায় সরব হবেন, এই আশঙ্কায় সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে রাজনাথের সঙ্গে বৈঠকের সময় ঠিক হয়।

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রশ্নে কোর্টে রাজ্য

Advertisement

বৈঠক শেষে রোশন বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করায় বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপাদের মোর্চা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাহাড়ে এক জনই নেতা, বিমল গুরুঙ্গ।’’ গুরুঙ্গকে বাদ দিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হলে ফের অশান্তি শুরু হতে পারে, সতর্ক করা হয় কেন্দ্রকে।

বৈঠকটির কথা জানার পরে ক্ষিপ্ত রাজ্যের বক্তব্য, পাহাড় যখন স্বাভাবিক হয়ে আসছে, তখন এই বৈঠক করে পরিস্থিতি ফের জটিল করছে কেন্দ্র। রাজনাথ কেন বারবার রোশনদের কাছ থেকে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আবেদন শুনছেন, সেই প্রশ্নও তোলা হয়। রাজ্যের বক্তব্য, নবান্নের সঙ্গে কথা না বলে তো ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা সম্ভব নয়! আর এখন ত্রিপাক্ষিকের প্রশ্নই বা উঠবে কেন?

দার্জিলিঙে বিস্ফোরণের ঘটনায় গুরুঙ্গের সঙ্গে রোশনের বিরুদ্ধেও ইউএপিএ-তে মামলা হয়েছে। রাজ্যের প্রশ্ন, এমন এক জনের সঙ্গে কী ভাবে দেখা করেন রাজনাথ? জরুরি ভিত্তিতেই বা কী করে তাঁকে সময় দেন? এ দিনের বৈঠকের ছবি প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজ্যের বক্তব্য, এই ভাবে ছবি প্রকাশ করার অর্থ, বৈঠককে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া। তাদের প্রশ্ন, যারা সর্বদলে না এসে কার্যত পালিয়ে বেড়াচ্ছে, তাদের এ ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে কেন কেন্দ্র? এই নিয়ে অহলুওয়ালিয়াকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও জবাব দেননি।

মমতার নির্দেশে রাজনাথের দফতরে ফোন করেন দলের লোকসভার নেতা সুদীপ। কিন্তু মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়, মন্ত্রী এখন ব্যস্ত। ফলে রাতে আর কথা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন