কালীপাহাড়ির পথে দলছুট হাতি। —নিজস্ব চিত্র।
পথ ভুলে নতুন রুটে ঢুকে পড়ল দলছুট একটি হাতি। শনিবার সকাল থেকে এই নিয়ে শোরগোল বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের ছাতনা রেঞ্জের কালীপাহাড়ি জঙ্গল এবং লাগোয়া গ্রামে। এক দিকে যেমন লোকালয়ে হাতি ঢুকে পড়ার আশঙ্কা শুরু হয়েছে, তেমনই হাতি দেখতে অন্য গ্রামের বাসিন্দারা ভিড় শুরু করেছেন কালীপাহাড়ির জঙ্গলে। হাতি ঢুকে পড়ার খবর পেয়ে তৎপর বন দফতরও। তার গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখার জন্য বনকর্মীদের একটি বড় দল মোতায়েন করা হয়েছে গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে।
গত কয়েক মাস ধরে বাঁকুড়ার পাবয়ার জঙ্গলে থাকার পর সপ্তাহ দুয়েক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে ফিরে যায় ৭০ থেকে ৮০টি হাতির একটি দল। তারা পশ্চিম মেদিনীপুরে ফিরে যাওয়ার পরে স্বস্তি ফেরে বন দফতরে। কিন্তু শুক্রবার রাতে দলছুট একটি হাতি গঙ্গাজলঘাঁটি রেঞ্জের পিড়রাবনির জঙ্গল থেকে বেরিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে শনিবার ভোরে পৌঁছে যায় ছাতনা রেঞ্জের কালীপাহাড়ির জঙ্গলে। এমনিতে কালীপাহাড়ির জঙ্গল তেমন ঘন নয়। তা ছাড়া ওই জঙ্গলে আগে কখনও হাতি না যাওয়ায় তার কাছে রাস্তাও অজানা। এই পরিস্থিতিতে ঘুম উড়েছে বন দফতরের কর্তাদের। হাতির গতিবিধি নজরে রাখতে কালীপাহাড়ির জঙ্গলে মোতায়েন করা হয়েছে বনকর্মীদের। বলা হয়েছে হুলা পার্টিকেও।
তবে চিন্তা বাড়িয়েছে এলাকার মানুষের উৎসাহ। বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এমনিতেই হাতিটি নতুন জায়গায় চলে আসায় বিভ্রান্ত। তার উপর ওই এলাকায় প্রথম হাতি আসায় অনেকেই জঙ্গলে ঢুকে হাতি দেখার চেষ্টা করছেন। এই পরিস্থিতিতে যে কোনও সময়ে বিপদ ঘটতে পারে। অগত্যা আমরা হাতিটিকে সারা ক্ষণ কড়া নজরদারির মধ্যে রেখেছি।’’ অন্য দিকে, এলাকার বাসিন্দা বিষ্ণু হাঁসদার কথায়, ‘‘বাঁকুড়া জেলায় দলে দলে হাতি এলেও আমাদের এই এলাকায় এই প্রথম কোনও বুনো হাতি এল। হাতিটি খুব চনমনে মেজাজে রয়েছে। কোনও ভাবে হাতিটি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে হানা দিলে বড়সড় বিপদের আশঙ্কা। তাই বন দফতরের কাছে আমাদের অনুরোধ, দ্রুত হাতিটিকে পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হোক।”