ধর্ষণের মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন রুদ্রনীল

প্রায় দশ বছর পরে ধর্ষণের মামলা থেকে মুক্তি পেলেন অভিনেতা তথা তৃণমূল নেতা রুদ্রনীল ঘোষ। বুধবার আলিপুর আদালত এই রায় দিয়েছে। ২০০৫-এ রুদ্রনীলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা করেন এক অভিনেত্রী। বুধবার সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে আলিপুরের দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক গৌরসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, অভিনেত্রীর সঙ্গে রুদ্রনীলের দীর্ঘদিনের পরিচয় ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০২:২৯
Share:

রায়ের পরে। আলিপুর আদালতের বাইরে রুদ্রনীল ঘোষ। বুধবার।—নিজস্ব চিত্র।

প্রায় দশ বছর পরে ধর্ষণের মামলা থেকে মুক্তি পেলেন অভিনেতা তথা তৃণমূল নেতা রুদ্রনীল ঘোষ।

Advertisement

বুধবার আলিপুর আদালত এই রায় দিয়েছে। ২০০৫-এ রুদ্রনীলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা করেন এক অভিনেত্রী। বুধবার সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে আলিপুরের দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক গৌরসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, অভিনেত্রীর সঙ্গে রুদ্রনীলের দীর্ঘদিনের পরিচয় ছিল। দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু এই ঘটনাকে ধর্ষণ এবং প্রতারণাও বলা যাচ্ছে না। এর পরেই রুদ্রনীলকে ধর্ষণের মামলা থেকে মুক্তির নির্দেশ দেন বিচারক।

২০০৫-এ রিজেন্ট পার্ক থানায় অভিযোগ হওয়ার পর গ্রেফতার হন রুদ্রনীল। পরে জামিন পান। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ) এবং ৪২০ (প্রতারণা) ধারায় রুদ্রনীলের বিরুদ্ধে চার্জশিটও পেশ করা হয়।

Advertisement

এ দিন রুদ্রনীলের আইনজীবী অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সরকার পক্ষ অভিযোগের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এই রায়।” সরকার পক্ষের আইনজীবী মলয় চৌধুরীর দাবি, অভিযোগকারিণী ও তাঁর মা, ম্যারেজ রেজিস্ট্রার-সহ ১১ জন সাক্ষীর বয়ানে অভিযোগ প্রমাণের পক্ষে যথেষ্ট উপাদান ছিল। এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে যাবেন বলেও সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান। অভিযোগকারিণীর আইনজীবী শান্তনু সিংহ বলেন, “সরকার পক্ষ আর না এগোলে আমরা নিজেরাই হাইকোর্টে যাব।”

বেলা বারোটা নাগাদ সাদা শার্ট ও নীল জিন্স পরে আদালতে হাজির হন রুদ্রনীল। হাসিহাসি মুখেই বন্ধুবান্ধব পরিবেষ্টিত হয়ে এজলাসে ঢুকে যান। তার পরেই পুলিশ ও রুদ্রনীলের বন্ধুরা এজলাসের দরজা আটকে দাঁড়িয়ে পড়ে। শুনানি শুরু হতেই রুদ্রনীলকে কাঠগড়ায় উঠতে বলেন বিচারক। তার পর রায় পড়ে শোনান। মামলা থেকে মুক্তির নির্দেশ শোনার পর হাসি চওড়া হয় তাঁর। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েই বিচারককে হাতজোড় করে নমস্কার জানান অভিনেতা তথা রাজ্যের বৃত্তিমূলক শিক্ষা সংসদের বর্তমান সভাপতি রুদ্রনীল ঘোষ। বেরোতেই তাঁর কয়েক জন ঘনিষ্ঠ যুবক গলায় রজনীগন্ধার মালা পরিয়ে দেন।

রুদ্রনীল বলেন, “বিচার ব্যবস্থার প্রতি ভরসা ছিল। এক দশকে অনেক হয়রানি হয়েছে। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এখন খুশি।” তাঁর বক্তব্য, কিছু মহিলা ধর্ষণ ও নারী নিগ্রহ বিরোধী আইনের অপব্যবহারের চেষ্টা করেন। এটা খুবই দুঃখজনক। এর জন্য সত্যিকারের নির্যাতিতাদের ভুগতে হয়। রুদ্রনীলের মন্তব্য, “কাজের আশায় আমার কাছে অনেকে আসত। যাঁরা যোগ্য তাঁদের কাজ দিয়েছিলাম। অযোগ্যদের দিইনি। কাজ না পেয়েই এমন ব্ল্যাকমেলের চেষ্টা হয়েছে।” অভিযোগকারিণীর বক্তব্য, ২০০৩-এ রুদ্রনীল ক’টা কাজ পেতেন, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন