সন্ধ্যা রায়। ফাইল চিত্র।
ষোড়শ লোকসভার শেষ দিন ছিল বুধবার। আর বৃহস্পতিবার ফেসবুকে নিজের ‘পথের পাঁচালী’ লিখলেন মেদিনীপুরের তৃণমূল সাংসদ সন্ধ্যা রায়।
কেন সিনেমা থেকে রাজনীতিতে এসেছেন, সাংসদ হয়ে কী কী করেছেন, আগামী দিনের পরিকল্পনা— সবই রয়েছে সেই পাঁচালীতে। তবে ‘আমার পথের পাঁচালী’ শীর্ষক ওই ফেসবুক পোস্টের একটি অংশ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে, যেখানে সন্ধ্যা সাংসদ হিসাবে তাঁর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন। সন্ধ্যা লিখেছেন, ‘আমার মেদিনীপুর লোকসভার বেশ কিছু সমস্যা মাননীয়া স্পিকার মহাশয়ার কাছে তুলে ধরেছিলাম। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পোস্ট অফিস ডিজিটাল করা, কেশিয়াড়ি বিধানসভায় রেলপথ ব্যবস্থা চালু করা, কিছু দূরপাল্লার ট্রেন বেলদা এবং দাঁতন স্টেশনে দাঁড় করানো’।
সন্ধ্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, নিজের নির্বাচনী এলাকার দাবিদাওয়া নিয়ে লোকসভায় বিশেষ কিছু বলতে শোনা যায়নি তাঁকে। এমনকি, এলাকায় তাঁর বিশেষ দেখাও পাওয়া যেত না বলে অভিযোগ। দ্বিতীয় অভিযোগ নিয়ে নীরব থাকলেও সাংসদের তাঁর পাঁচালিতে প্রথম অভিযোগেরই জবাব দিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি অবশ্য সাংসদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ধ্যা রায় সত্যিই প্রচুর কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন: ভালবাসার পাসপোর্ট মঞ্জুর, নিশ্চিন্ত এ পারের বীর-জারা
মেদিনীপুরের মানুষ যখন চেয়েছেন তাঁকে পেয়েছেন।’’ যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘উনি বাসস্ট্যান্ডে আলো লাগিয়েছেন। সে তো পুরসভাও করতে পারে। আমি ওঁকে ট্রমা সেন্টার করতে বলেছিলাম করেননি। কিছু করেননি বলেই ফেসবুকে প্রচার করতে হচ্ছে।’’
লোকসভায় নীরব থাকা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লেও সাংসদ তহবিলের টাকা খরচের ক্ষেত্রে বারবার প্রশংসিত হয়েছেন সাংসদ। পাঁচালীতে তারও উল্লেখ করেছেন সন্ধ্যা। লিখেছেন, ‘দীর্ঘ পাঁচ বছর আমার সাংসদ তহবিলের সব অর্থ সাধারণ মানুষদের জন্য খরচ করেছি। এবং ভারতবর্ষের মধ্যে একবার তৃতীয়, একবার চতুর্থ এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে তিনবার প্রথম, একবার তৃতীয় স্থান অধিকার করেছি।’
কেন রুপোলি পর্দা ছেড়ে রাজনীতিতে আসা তার ব্যাখ্যায় সন্ধ্যা লিখেছেন, ইচ্ছে ছিল মানুষের হয়ে কিছু করার। জেদ আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল ২০১৪ সালে যখন পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে প্রস্তাব দেন যে তুমি মেদিনীপুর লোকসভার সাংসদ হয়ে জনপ্রতিনিধিত্ব করবে।’ পাঁচালিতে তিনি জানিয়েছেন, যে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করে ধরেছিলেন আগামী দিনেও তাই করবেন।
ফের কি প্রার্থী হবেন সন্ধ্যা? জল্পনা তৃণমূলের অন্দরে। লোকসভার মেয়াদ শেষের পরই সাংসদ দীর্ঘ পাঁচালী পোস্ট করে কি সে জল্পনায় জল-বাতাস দিলেন!