‘ফুটব্রিজে হঠাৎ প্রচণ্ড ধাক্কা, তারপরে আর কিছু মনে নেই’

আহতদের কেউ শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, কেউ রক্তাক্ত, কেউ আবার অনবরত বমি করে চলেছেন, অনেকেই এখনও অচেতন। দুর্ঘটনার দেড় ঘণ্টা পরে মঙ্গলবার রাতে হাওড়া জেলা হাসপাতালের ছবিটা ছিল এ রকমই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৪৩
Share:

এই ফুট ওভারব্রিজেই দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

আহতদের কেউ শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, কেউ রক্তাক্ত, কেউ আবার অনবরত বমি করে চলেছেন, অনেকেই এখনও অচেতন। দুর্ঘটনার দেড় ঘণ্টা পরে মঙ্গলবার রাতে হাওড়া জেলা হাসপাতালের ছবিটা ছিল এ রকমই।

Advertisement

এ দিনের দুর্ঘটনায় ১৩ জন আহত হয়েছেন এবং ২ জন মারা গিয়েছেন। মৃতদের মধ্যে এক জন বৃদ্ধ এবং অন্য জন বছর চল্লিশের।

রেল সূত্রে খবর, ঘটনার কিছু ক্ষণের মধ্যেই উদ্ধারকাজ শুরু হয়। রেলের তরফে অ্যাম্বুল্যান্সে করে আহতদের ৩ জনকে সাঁতরাগাছি রেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যদের হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক দু’জনের মৃত্যু হয়। অন্যদের মধ্যে ৩ জন মহিলা, ১ জন শিশু এবং ৯ জন পুরুষ। আহতদের মধ্যে বছর দশেকের একটি শিশুও রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে পরে মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

Advertisement

পরে গার্ডেনরিচ থেকে রেলের চিকিৎসকদের একটি দল হাওড়া জেলা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসার কাজে হাত লাগায়। আহতদের মধ্যে শিল্পা ওঁরাও নামের এক যাত্রী জানান, তিনি চেন্নাই এক্সপ্রেস থেকে নেমেছিলেন। তিনি বলেন, “ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনের বাইরে যাওয়ার জন্য ফুটব্রিজ ধরে হাঁটছিলাম। আচমকা একটা প্রচণ্ড ধাক্কায় ছিটকে পড়ে গেলাম। তার পরে আর কিছু মনে নেই।”

আরও পড়ুন: স্টেশনে একসঙ্গে ৮টি ট্রেন, প্রবল ঠেলাঠেলিতে সাঁতরাগাছিতে পদপিষ্ট, মৃত ২

ওই সময় খড়্গপুরগামী লোকাল ট্রেন ধরার জন্য যাচ্ছিলেন মিলন যশ। তিনিও হুড়োহুড়ির মধ্যে পড়ে গিয়ে অল্পবিস্তর আহত হন। এ দিন মিলন বলেন, “৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে লোকাল ট্রেন ধরার জন্য যাচ্ছিলাম। আচমকা ধাক্কায় সিঁড়ির মধ্যে ছিটকে পড়লাম। গায়ের উপর দিয়ে অনেকে চলে গেল। কী ভাবে কোনওমতে রক্ষা পেয়েছি জানি না।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা অবশ্য ঘটনার জন্য রেলকেই দুষেছেন। বাঘাযতীনের বাসিন্দা ঝুমা দাস বলেন, “আমি স্বামীকে নিয়ে বিলাসপুর থেকে ফিরছিলাম, স্টেশনে নেমে দেখি ফুটব্রিজেরও উপরেও একই ভিড়। কোনও মতে একপাশে সরে যাই। ভিড়ের মধ্যে থেকে বার বার আর্তনাদ শুনতে পেয়েছি।”

ঝুমা দেবীর স্বামী মনীশ দাস চোখে দেখতে পান না। তিনি বলেন, “ভিড় দেখতে না পেলেও আর্তনাদ শুনে বুঝেছি বড় কিছু অঘটন ঘটেছে। রেল রক্ষীদের আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল।” রেলের অবশ্য দাবি, আহতদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সব রকম সাহায্য করা হচ্ছে। রেলের পক্ষ থেকে বিশেষ হেল্পলাইনও খোলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন