এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র দফতরে হাজিরা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়।
ইডি-র তলবে ওই সাংসদ বুধবার নিজে না-গিয়ে তাঁর আইনজীবীকে সল্টলেকে তদন্তকারী সংস্থার আঞ্চলিক দফতরে পাঠান। সেই আইনজীবী ইডি-র আধিকারিকদের জানান, সংসদের বাদল অধিবেশন চলায় সাংসদ হাজির হতে পারেননি। কিন্তু সেই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি ইডি। আইনজীবীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁর ওই সাংসদ-মক্কেলকে সশরীর হাজির হতে হবে।
সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে এর আগে তৃণমূলের অন্য অভিনেতা-সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তীকে তলব করেছিল ইডি। ওই সাংসদ মুম্বইয়ে ইডি-র দফতরে হাজির হলেও কলকাতায় তাদের পূর্বাঞ্চলীয় অফিসে যাননি। কারণ দেখিয়েছিলেন ব্যস্ততার। শেষ পর্যন্ত মিঠুন রাজারহাটের একটি হোটেলে উঠেছেন জেনে ইডি-র তদন্তকারীরাই সেখানে চলে যান। শতাব্দীর ক্ষেত্রে সশরীর হাজিরার কারণ হিসেবে ইডি বলছে, সারদার সঙ্গে ওই সাংসদের সম্পর্ক ও আদানপ্রদান সংক্রান্ত কিছু তথ্যে অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়ে খোদ সাংসদকেই সেই অসঙ্গতি দূর করতে হবে। কৌঁসুলি পাঠালে হবে না। সে-ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই সাংসদকে ফের তলব করা হতে পারে বলে ইডি সূত্রে জানানো হয়েছে।
এ দিন ইডি-র দফতরে হাজির হওয়ার কথা ছিল শতাব্দীর। কিন্তু বেলা ১১টার কিছু আগে সেখানে যান তাঁর আইনজীবী উমাশঙ্কর রায়। ইডি-র দফতরে যাওয়ার আগে তিনি বলেন, ‘‘আমার মক্কেল লোকসভার বাদল অধিবেশনে ব্যস্ত আছেন। তাই তিনি হাজির হতে পারছেন না।’’ মিনিট পনেরো পরে আইনজীবী ইডি-র দফতর থেকে বেরিয়ে যান।
ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, সারদা গোষ্ঠীর একটি সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হওয়ার সূত্রে তাদের সঙ্গে
শতাব্দীর যে-আর্থিক চুক্তি হয়েছিল, তাতে একাধিক অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। সেই সব আর্থিক চুক্তি এবং সাংসদের সম্পত্তি সংক্রান্ত নথি চাওয়া হয়েছিল। কিছু নথি জমা পড়েছে ইডি-র কাছে। কিন্তু সাংসদের দেওয়া নথিপত্রের সঙ্গে সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং সেখানকার বেশ কয়েক জন হিসেবরক্ষকের দেওয়া তথ্যে গরমিল পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা সাংসদের আইনজীবীর কাছ থেকে সেই সব অসঙ্গতির জবাব পেতে চান না। স্বয়ং সাংসদকে সশরীর হাজির হয়ে সেই অসঙ্গতি দূর করতে হবে।