শতাব্দী রায়। ফাইল চিত্র।
পুরোদস্তুর যাত্রায় ফিরলেন শতাব্দী রায়। চার বছর বাদে।
অষ্টমীর রাত থেকে জেলায় জেলায় ঘুরে ‘রাতপরীর রূপকথা’র গল্প শোনাচ্ছেন শতাব্দী। প্রেমের টানে শহর থেকে গ্রামে যাওয়া রূপকথা নামের মেয়েটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদের মুখ হয়ে ওঠে। হয়ে ওঠে গ্রামের মানুষের ভরসা। এই রূপকথার চরিত্রে অভিনয় করতে তাঁর নিজের কেন্দ্র বীরভূমেও যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে স্থানীয় সাংসদের। কবে যাবেন, দিনক্ষণ ঠিক হয়নি এখনও।
সাংসদ শতাব্দীর বীরভূম-যাত্রা যে এখন অনিয়মিতই! অন্তত জেলার তৃণমূল নেতাদের অনেকেই তা-ই বলছেন। এমনকী, গত মাস থেকে নাগাড়ে একের পর এক সভায় স্থানীয় মন্ত্রী-বিধায়করা এলেও সাংসদ অধরাই! বছরখানেক শতাব্দী এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচিতেই নেই বলেই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অভিযোগ। তারকা মুখ এনে বাজিমাত করার কৌশলে শতাব্দীদের ভোটের ময়দানে টেনে এনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখন রাজনীতির চেয়ে অভিনয়ের চেনা আঙিনায় বেশি দেখা যাচ্ছে তাঁদের!
যদিও শতাব্দীর দাবি, ‘‘প্রতি মাসেই আমার কেন্দ্রে যাই। পুজোর পরে বিজয়া সম্মিলনী করেছি। অক্টোবরে রামপুরহাটে আদিবাসীদের ফুটবল খেলাতেও গিয়েছি। গত ৯-১০ নভেম্বর রামপুরহাটে একটি স্কুলের উন্নয়নে টাকা দিলাম। সাঁইথিয়ায় অ্যাম্বুল্যান্স উদ্বোধনে গেলাম। কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিতই যোগাযোগ থাকছে। কারা কেন এ সব বলছেন, জানি না!’’
বীরভূমের মতো রুক্ষ জেলায় অভিনয় থেকে নিজেকে কার্যত ‘বিচ্ছিন্ন’ রেখেই শতাব্দী এক সময় নিয়মিত গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষের কাছে পৌঁছেছেন। যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ‘শীতল’। তা হলে কি শতাব্দী আবার অভিনয়েই ফিরে যেতে চাইছেন? সাংসদের জবাব, ‘‘নানান বাধা এড়িয়ে নিজের মতো করে এলাকায় কাজ করি। সে জন্যই আমি টানা ৮ বছর ধরে সাংসদ বীরভূমে।’’
শতাব্দী নিজেই বলছেন, ‘‘অভিনয়ের মধ্যে একদমই নেই আমি। খুব ভাল ছবি পাচ্ছি না। যে চরিত্রগুলোর অফার আসছে, পছন্দ হচ্ছে না। শ্বাস নেওয়ার জন্য যাত্রায় ফিরেছি।’’ গত দু’মাসে ১৫টা শো হয়ে গিয়েছে ‘রাতপরীর রূপকথা’র। শীতের ভরা যাত্রা মরসুমে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৫টা শো-র বায়নাও হয়ে গিয়েছে। তা হলে বীরভূমের জন্য সময় কোথায়? শতাব্দী বলছেন, ‘‘আগামী ২০ নভেম্বর বীরভূমে যাচ্ছি। সংসদের অধিবেশন আর বীরভূমের কর্মসূচি দেখে নিয়েই যাত্রার সময় বার করছি। বীরভূম আমার কাছে প্রথম অগ্রাধিকার।’’
মুখে এ কথা বললেও তাঁর অভিনয়ে ফেরার খবর শুনে অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খন্না, মিঠুন চক্রবর্তীদের কথা। রুপোলি পর্দা থেকে রাজনীতিতে এসে ভাল শুরু করেও দ্রুত সেখান থেকে বিদায় নিয়েছেন তাঁরা। মমতার দলেই রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার বছরদুয়েকের মাথায় সারদা-কাণ্ডে নাম জড়ানো বঙ্গসন্তান মিঠুনও রাজনীতির ইনিংসে ইতি টেনেছেন।
শতাব্দীও কি অগ্রজদের পথেই?