শনিবার প্রথম বার একটি বোয়িং ৭৩৭ মধ্যরাত পেরিয়ে কলকাতা থেকে এসে ১২টা ৬ মিনিটে নামে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
দিনের বিমানবন্দর বলেই পরিচিতি। সন্ধ্যার পর বিশেষ ব্যবস্থায় বিমান বা এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ওঠানামাও করেছে। আলাদা ব্যবস্থায় নেমেছে রাষ্ট্রপতি মতো ভিভিআইপিদের বিমানও। তবে বায়ুসেনার তত্ত্বাবধানে রাত ১০টার মধ্যেই সব হয়েছে। শনিবারই প্রথম বার মধ্যরাতে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে বিমান চলাচল করল। বিমান বাতিলের জেরে শতাধিক যাত্রীদের ক্ষোভের আশঙ্কায় এই ব্যবস্থা করা হয় বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর।
দেরিতে চলা দিল্লিগামী একটি বোয়িং ৭৩৭ মাঝ রাতে বাগডোগরা নেমে যাত্রী নিয়ে ফের মধ্য রাতেই দিল্লি উড়ে গিয়েছে। ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম বা আইএলএস চালুর মুখে প্রযুক্তিগত আলোর সাহায্যে (অ্যাপ্রোচ লাইট) বিমান ওঠা-নামা করানো হয়েছে বাগডোগরায়। পরিষেবার কথা মাথায় রেখে রাতে গোটা বিমানবন্দর, রেস্তোরাঁ খোলার ব্যবস্থা ছাড়াও এনবিএসটিসি-র বিশেষ বাসে যাত্রীদের শিলিগুড়ি শহরে পৌঁছনোর ব্যবস্থাও করা হয়।
শনিবার বিমানটি প্রথমে দিল্লি থেকে কলকাতায় পৌঁছয় ৭টা নাগাদ। দ্বিতীয় দফায় বাগডোগরায় আসলেও তা রাত ১০টার মধ্যে সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। সেই সময় রানওয়ের দৃশ্যমানতা প্রায় ৩০০০ মিটার ছিল। দুপুরের পরেই বিমানটির ১৪২ জন যাত্রী বিমানবন্দরে ঢুকে সিকিউরিটি চেক করে নেন। বিমান বাতিল হলে রাতে বিমানবন্দরে কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যায়। শেষে বায়ুসেনা, দিল্লি এবং বিমান সংস্থাটির সঙ্গে কথা বলে গভীর রাতে বিমানটিকে ‘অপারেট’ করানোর সিদ্ধান্ত হয়। রাত ১টা অবধি বিমান চলাচলের ছাড়পত্র নেওয়া হয়।
বিমানবন্দর অধিকর্তা রাকেশ সহায় বলেন, ‘‘বাগডোগরা বিমানবন্দরের এটা ইতিহাস। শতাধিক যাত্রীর কথা ভেবে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উচ্চ পর্যায়ের অনুমতিও মেলে।’’ তিনি জানান, বিমানটির ওঠা বা নামায় কোনও সমস্যা হয়নি। বিমান সংস্থাগুলিই রাতে বাগডোগরা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা শুরু করেছে।
অফিসারেরা জানান, ওই বিমানটি বাগডোগরায় কলকাতা থেকে আসার কথা ছিল বিকাল ৪টা নাগাদ। পরে সেটি দিল্লি ফেরার কথা ছিল ৪-৩০ মিনিট নাগাদ। কিন্তু কলকাতায় বিভিন্ন বিমানের সূচির পরিবর্তনের পর বিমানটি সময় পিছাতে থাকে। এক সময় বোঝা যায়, বিমানটিকে কোনও ভাবেই ১০টার আগে বাগডোগরায় আসতে পারবে না। যাত্রীদের মধ্যে বিমান বাতিলের আশঙ্কায় ক্ষোভও দেখা দেয়। কলকাতা, দিল্লিতে যোগাযোগ করা হয়। বেশি রাতে এনবিএসটিকে একটি ছোট বাসের ব্যবস্থা করতেও বলা হয়। শেষে ১২-০৬ মিনিটে ১৪ জন যাত্রী নিয়ে বিমানটি বাগডোগরায় আসে। বাসে তাদের হিলকার্ট রোডে পৌঁছনো হয়। ১২টা ৪০ মিনিট নাগাদ বিমানটি ১৪২ জন যাত্রী নিয়ে দিল্লি চলে যায়।
বাগডোগরায় বিমান নামা-ওঠা করানোর ক্ষেত্রে বায়ুসেনা মুখ্য ভূমিকা নেয়। বিমানবন্দরের এটিসি-ও তাঁদের নিয়ন্ত্রণে। সন্ধ্যার পর এটিসি সাধারণত বন্ধ করা হয়। কালকে তা ফের সচল করানো হয়।