Education

ওয়াকফ বোর্ডে কর্মীর আকাল, বৃত্তি বন্ধ সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের

১৯৩৪ সালে প্রথম থেকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত মেধাবী পড়ুয়াদের প্রতি বছর এককালীন বৃত্তি দিত বোর্ড। সেটা ২০২১ সাল থেকে বন্ধ।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৩০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

থাকার কথা ১১২ জন কর্মী। রয়েছেন মাত্র ২৫ জন। এঁদের মধ্যে স্থায়ী কর্মী ৬ জন। অস্থায়ী ১৯ জন।

Advertisement

রাজ্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের অধীনে ওয়াকফ বোর্ড গুটিকয়েক কর্মীদের দিয়ে চালানো যে মুশকিল হয়ে পড়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আবদুল গনি।

তাঁর অভিযোগ, ‘‘কর্মী নিয়োগ করতে নিয়মিত নবান্নে চিঠি পাঠানো হলেও কোনও আমলই দেওয়া হয় না। রাজ্যজুড়ে ওয়াকফ সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ করা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে প্রতি বছর মোটা টাকার কর পাওয়ার কথা বোর্ডের। কিন্তু কর-খেলাপিরা কর না দেওয়ায় সংখ্যালঘুদের স্বার্থে উন্নয়নমূলক কাজও ব্যাহত হচ্ছে।’’

Advertisement

সারা রাজ্যে নথিভূক্ত ওয়াকফ সম্পত্তির সংখ্যা ৭,১৭৬। কলকাতায় রয়েছে ১০৪০। বাকি কলকাতার বাইরে। প্রসঙ্গত বহু যুগ আগে সম্ভ্রান্ত দানশীল মুসলিমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নয়নে তাঁদের সম্পত্তি রাজ্য সরকারের অধীনে ওয়াকফ বোর্ডকে দান করে গিয়েছেন। কিন্তু বছরের পর বছর ওয়াকফ বোর্ডে কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় এই সমস্ত কর্মকাণ্ড পিছিয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ বোর্ডের চেয়ারম্যানের।

১৯৩৪ সালে প্রথম থেকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত মেধাবী পড়ুয়াদের প্রতি বছর এককালীন বৃত্তি দিত বোর্ড। সেটা ২০২১ সাল থেকে বন্ধ। চেয়ারম্যানের সাফাই, ‘‘রাজ্যের অনেক মেধাবী মুসলিম পড়ুয়া, বিশেষত মেয়েরা দূরদূরান্ত থেকে কলকাতায় পড়তে আসছে। কিন্তু বোর্ড পরিচালিত সাকুল্যে দু’টি ছাত্রীবাস থাকায় মেয়েরা থাকার জায়গা পাচ্ছে না। কর্মী নিয়োগ হলে আমরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ওয়াকফ সম্পত্তিগুলিতে পরিদর্শন করে বকেয়া কর আদায় করতে পারি। সেই টাকায় নতুন করে ছাত্রীবাস গড়তে পারি। আর্থিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে ওয়াকফ বোর্ড। নতুন করে কোনও কাজই হচ্ছে না।’’

যদিও বোর্ডের কর্মী, আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, চেয়ারম্যান গত ১৫ বছর ধরে পদে রয়েছেন। কেবল চিঠি লিখে দায়সারা মনোভাব দেখাচ্ছেন। চেয়ারম্যান আরও সক্রিয় হলে বোর্ডের এতটা দুর্দশা হত না।

রাজ্যের ওয়াকফ সম্পত্তিগুলিতে পরিদর্শন করার জন্য ১৫ জন ইন্সপেক্টর থাকার কথা। কিন্তু এখন একজনও নেই। বোর্ড চেয়ারম্যানের অভিযোগ, ‘‘ওয়াকফ সম্পত্তি সঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাজ্যের ২৩টি জেলার প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে দু’জন করে ইন্সপেক্টর নিয়োগ করতে নবান্নে চিঠি লিখেছিলাম। লাভ হয়নি।’’

আইনজীবী ফাজলে হকের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর ওয়াকফ বোর্ডের বিন্দুমাত্র উন্নতি হয়নি। মেধাবী সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের বৃত্তি প্রদান বন্ধ করা মানেই বোঝা যাচ্ছে ওয়াকফ বোর্ডে কী কাজ হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন