স্কুলশিক্ষা দফতর বদলির আবেদন মঞ্জুর করেছে। সেই মঞ্জুরি অনুযায়ী স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) অন্য স্কুলে বদলি করে নিয়োগপত্রও দিয়েছে। তা সত্ত্বেও বর্তমান স্কুল প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র না-দেওয়ায় এক শিক্ষিকার বদলি কার্যকর হয়নি। এই অবস্থায় কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, কোনও স্কুলেরই পরিচালন কর্তৃপক্ষ কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকার বদলি আটকাতে পারেন না।
আবেদন-নিবেদন, জেলা স্কুল পরিদর্শকের সুপারিশ সত্ত্বেও পাথরপ্রতিমার ওই স্কুলের পরিচালন কমিটি বদলি সংক্রান্ত ছাড়পত্র না-দেওয়ায় নিরুপায় শিক্ষিকা মামলা দায়ের করেন হাইকোর্টে। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, স্কুল কমিটির ছাড়পত্র না-মেলায় ওই শিক্ষিকার গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হয়েছে। স্কুল পরিচালন কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ছাড়পত্র দিতে হবে ওই শিক্ষিকাকে।
বন্দনা মণ্ডল নামে ওই শিক্ষিকা পাথরপ্রতিমার একটি স্কুলে বাংলা পড়ান। তাঁর আইনজীবী এক্রামুল বারি জানান, বাড়ির কাছে কোনও স্কুলে বদলি চেয়ে বন্দনাদেবী রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন করেন। গত বছর ১৪ ডিসেম্বর শিক্ষা দফতরের সহকারী সচিব সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। স্কুল সার্ভিস কমিশন চলতি বছরের এপ্রিলে বারুইপুরের একটি স্কুলে ওই শিক্ষিকাকে বদলির নিয়োগপত্র দেয়। তার ভিত্তিতেই পাথরপ্রতিমার স্কুলের পরিচালন কমিটির কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেওয়ার সুপারিশ করেন জেলা স্কুল পরিদর্শক। তা সত্ত্বেও ছাড়পত্র মেলেনি।
আইনজীবী জানান, বুধবার মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। স্কুল পরিচালন কমিটির তরফে আদালতে জানানো হয়, তাদের স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১২০০। এই বিপুল সংখ্যক পড়ুয়ার জন্য বাংলার শিক্ষক আছেন মাত্র এক জন। তিনি হলেন বন্দনাদেবী। সেই জন্য তাঁকে ছাড়া যাবে না বলে স্কুলেক পরিচালন কমিটি একটি প্রস্তাবও গ্রহণ করেছে।
এক্রামুল জানান, বিচারপতি স্কুল পরিচালন কমিটির বক্তব্য শুনে জানিয়ে দেন, ছাড়পত্র না-দেওয়ার এই যুক্তি বা কারণ ঠিক নয়। বদলির আবেদন করা গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই অধিকার কোনও মতেই খর্ব করা যায় না। ওই স্কুলের পরিচালন কমিটিকে বিচারপতির নির্দেশ, অবিলম্বে বন্দনাদেবীর ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুলের পড়ুয়াদের বাংলা পড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে অস্থায়ী ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করতে পারবেন।
আইনজীবী জানান, কিছু আগে পুরুলিয়ার দুই শিক্ষিকার বদলির দু’টি মামলাতেও একই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়।