ঠিক হয়েছিল সাদা কেডস দেওয়া হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সায় দিল না নবান্ন। তাই দরপত্র ডেকেও তা বাতিল করতে হল স্কুলশিক্ষা দফতরকে। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রাথমিক স্তরে রাজ্যের ৫৪ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে কেডস-এর বদলে কালো বুট দেওয়া হবে।
পরিবর্তিত সিদ্ধান্তের জেরে গত শুক্রবার ফের দরপত্র ডেকেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। ঠিক হয়েছে, ২২ ফেব্রুয়ারি দরপত্র চূড়ান্ত করা হবে। তার দু’-তিন দিনের মাথায় বরাত পাবে বাছাই করা সংস্থা। তবে তার আগে রাজ্য সরকারি সংস্থা মঞ্জুষা এবং বঙ্গশ্রীর কাছ থেকে সরাসরি কালো বুট কিনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত পাকা হয়েছে। এ মাসের শেষেই সরকারি স্কুলে ওই জুতো দেওয়া শুরু হবে বলে স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের দাবি।
জুতো বদল হল কেন?
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অফিসারদের গাফিলতি। গ্রামের ছেলেমেয়েরা সাদা কেডস নিয়ে কী করবে? গ্রামের মেঠো রাস্তা, সাইকেল চালানো ইত্যাদি অনেক ঝক্কি রয়েছে। তাই কেডস-এর বদলে কালো চামড়া বা পিভিসি-র জুতো দেওয়া হবে।’’
জুতো সরবরাহকারী সংস্থা নির্বাচনের ব্যাপারেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী। পার্থবাবু বলেন, ‘‘সর্বনিম্ন যে দর পাওয়া যাবে, দরপত্রে অংশগ্রহণকারী সব ক’টি সংস্থাই সেই দরে জুতো দিতে পারবে।’’ পাশাপাশি ছ’মাসে জুতো ছিঁড়বে না, এমন নিশ্চয়তাও সরবরাহকারী সংস্থাকে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
সরকারি সূত্রের খবর, জুতো প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিরও এই সিদ্ধান্তে সুবিধা হয়েছে। কারণ, অনেকেই ৫৪ লক্ষ কেডস স্বল্প সময়ে সরবরাহ করতে অপারগ বলে জানিয়েছিল। তার বদলে কালো জুতো দিতে সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছিল তারা।
রাজ্যের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ৫৪ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে প্রথম দফায় জুতো দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর। এ জন্য ১৫৪ কোটি টাকা খরচ হবে। অর্থ দফতর টাকা মঞ্জুরও করেছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কি মাত্র ৫৪ লক্ষ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে?
স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, দফতরের কাছে যে হিসাব রয়েছে, তাতে প্রাথমিকে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু প্রথম দিকে সব জেলায় জুতো দেওয়া হবে না। তুলনামূলক ভাবে পিছিয়ে
থাকা জেলাগুলিতেই প্রথম পর্বে জুতো বিলি হবে।