শিক্ষকদের তথ্য সুরক্ষায় ওটিপি

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল ফোনের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগের ফলে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনতার কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না দেশ জুড়ে সমালোচনা-উদ্বেগের অন্ত নেই। এই অবস্থায় শিক্ষকদের ব্যক্তিগত ও বেতন সংক্রান্ত নথির নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’ বা ওটিপি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৭
Share:

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল ফোনের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগের ফলে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনতার কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না দেশ জুড়ে সমালোচনা-উদ্বেগের অন্ত নেই। এই অবস্থায় শিক্ষকদের ব্যক্তিগত ও বেতন সংক্রান্ত নথির নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’ বা ওটিপি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর।

Advertisement

বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, প্রতিটি স্কুল থেকেই শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত নথি জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে পাঠাতে হয়। তার আগে একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘লগ-ইন’ করতে হয়। লগ-ইন করার জন্য প্রয়োজন হয় একটি নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ডের। এত দিন একটি নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড ব্যবহার হতো। সেটা একমাত্র জানতেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

কিন্তু সেই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে যে-কেউ ওয়েবসাইটটি লগ-ইন করতে পারতেন। সেই জন্যই এই পদ্ধতি বদলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দফতর। এ বার থেকে যত বার ওই সাইট খোলা হবে, তত বারই তাতে রেজিস্ট্রার করা মোবাইলে অর্থাৎ প্রধান শিক্ষকের মোবাইলে একটি করে ওটিপি পৌঁছবে। এবং শুধু তার সাহায্যেই খোলা যাবে শিক্ষকদের নথিপত্র সংক্রান্ত ফাইল।

Advertisement

পদ্ধতি বদলের এই ভাবনা কেন?

বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, প্রতিটি স্কুলই মাসের ১০ তারিখের মধ্যে শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত সমস্ত নথি ডিআই অফিসে পাঠায়। ওই সাইটে প্রত্যেক শিক্ষকের আধার নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, প্যান কার্ডের নম্বর, স্থায়ী ঠিকানা-সহ বেতন সংক্রান্ত সবিস্তার তথ্য থাকে। বিভিন্ন স্কুল থেকে অভিযোগ আসছিল, প্রধান শিক্ষকদের থেকে অনেকেই ওই পাসওয়ার্ড জেনে যাচ্ছেন। এর ফলে ওই সাইটে ঢুকে কোনও শিক্ষকের তথ্য চুরি করার আশঙ্কা থাকছে।

এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, তথ্য চুরি করা ছাড়াও কোনও শিক্ষকের সম্পর্কে ডিআই-এর কাছে ভুল তথ্য চলে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘এমন কিছু তথ্য সেখানে থাকে, যেটা আমিও পরিবর্তন করতে পারব না। আবার প্রতি মাসে পরিবর্তন করতে হয়, এমন কিছু তথ্যও থাকে। সে-ক্ষেত্রে বাড়তি সাবধানতা নিতেই হয়। দফতর সেটাই করেছে।’’

স্কুল থেকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের তালিকা পাঠানো এবং মিড-ডে মিলের হিসেব দেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েক মাস আগেই ওটিপি পদ্ধতি চালু হয়েছে। এ বার সেই তালিকায় জুড়ল শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত নথি। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন সবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্কুলগুলিতে এখনও সেই পদ্ধতি চালু হয়নি। তবে দ্রুত হয়ে যাবে।’’

এ ক্ষেত্রে একটি অসুবিধা হতে পারে বলে অনেক স্কুল-কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা। তাঁদের প্রশ্ন, প্রধান শিক্ষক যদি ছুটিতে যান, তখন কী ভাবে ওই সমস্ত নথি ডিআই অফিসে পাঠানো হবে? দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে ওই তালিকা পাঠাতে হয়। তাই সে-ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না।

এই উদ্যোগকে সমর্থন করছে শিক্ষক সংগঠন। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের যাবতীয় তথ্য ওই সা‌ইটে থাকে। সেটা নিরাপদ করতে দফতরের এই উদ্যোগ বেশ ভালই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন