যাদবপুরে মহাসঙ্কটে মানবী বিদ্যা কেন্দ্র

‘‘শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের চাকরি চলে গেলে সেটা অত্যন্ত দুঃখের হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় না-চাইলে কখনওই এই বিভাগ বন্ধ হবে না,’’ বলছেন ইন্টারডিসিপ্লিনারি স্টাডিজের ডিন এবং এই বিভাগের অধিকর্ত্রী শমিতা সেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাংলার ‘কন্যাশ্রী’ বিশ্বের বাহবা পাচ্ছে। আর সেই বাংলাতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অব উইমেন্স স্টাডিজ’ বা মানবী বিদ্যা চর্চা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা ছড়িয়েছে শিক্ষা শিবিরে। এই আশঙ্কার মূলে আছে গত জুনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র দেওয়া এক নির্দেশ।

Advertisement

ইউজিসি-র ৯ জুনের সেই নির্দেশ অনুযায়ী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বাদশ যোজনা চলাকালীন এই ধরনের প্রকল্প চলবে। তবে তার পরে এগুলো আর চলবে কি না, পরবর্তী কালে মূল্যায়নের ভিত্তিতে তা ঠিক করবে ইউজিসি। সেই মূল্যায়ন কবে হবে, ইউজিসি-র সংশ্লিষ্ট নির্দেশে তা জানানো হয়নি। এই পরিস্থিতিতেই সেপ্টেম্বরের শেষে চাকরি হারানোর আশঙ্কা আছে যাদবপুরের ওই বিভাগের আট জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর। তাঁদের সকলেরই কাজের অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের। ইউজিসি-র এই নির্দেশের ফলে ওই আট জনের যে চাকরি যেতে পারে, কর্তৃপক্ষের তরফে ইতিমধ্যে সেটা তাঁদের জানানো হয়েছে। এই ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে ইউজিসি-র সঙ্গে।

‘‘শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের চাকরি চলে গেলে সেটা অত্যন্ত দুঃখের হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় না-চাইলে কখনওই এই বিভাগ বন্ধ হবে না,’’ বলছেন ইন্টারডিসিপ্লিনারি স্টাডিজের ডিন এবং এই বিভাগের অধিকর্ত্রী শমিতা সেন।

Advertisement

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এই বিভাগ চালানোর অর্থ দেবে কে?

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। যাদবপুর সূত্র্রের খবর, সেই সময়েই কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, যে-রাজ্য কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়, সেখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উইমেন্স স্টাডিজ বিভাগ অস্তিত্ব রক্ষার সঙ্কটে পড়ছে। এটা মোটেই কাম্য নয়।

ওই বিভাগের আট জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর বেতন হয় ইউজিসি-র আর্থিক সাহায্য থেকে। নিয়ম অনুযায়ী রাজ্য সরকারের এই দায়িত্ব নেওয়ার কথা। কয়েক বছর আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ২০১৩ এবং ’১৫ সালে বিষয়টি উচ্চশিক্ষা দফতরকে জানানো হয়েছিল। ওই বিভাগের শিক্ষিকা নন্দিতা ধবন বলেন, ‘‘সমস্যা নিয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা
হয়েছে।’’ বিষয়টি নিয়ে সবিস্তার আলোচনা ও মতামত সংগ্রহের জন্য আজ, শুক্রবার যাদবপুরে কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

দেশের সব মানবী বিদ্যা চর্চা কেন্দ্রের মধ্যে ‘অ্যাডভান্সড সেন্টার ইন উইমেন্স স্টাডিজ’-এর সম্মান পেয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, পুণে বিশ্ববিদ্যালয় এবং মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। শিক্ষা মহল সূত্রের খবর, ইউজিসি-র সাম্প্রতিক নির্দেশে যে-সঙ্কট দেখা দিয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার জন্য মুম্বই ও পুণের কেন্দ্র দু’টি ইতিমধ্যেই কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। সঙ্কটমুক্তির চেষ্টা চলছে যাদবপুরেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement