Coronavirus Lockdown

ফি-নির্দেশে স্কুলে স্বস্তি, আন্দোলনে অনড় অভিভাবক

কলকাতার অধিকাংশ বেসরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষের মতে, বেশির ভাগ স্কুলই অমানবিক নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০২:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

বকেয়া ফি কেউ যদি পুরোপুরি দিতে না-ও পারেন, ৮০ শতাংশ মেটাতেই হবে বলে কলকাতা হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়ায় অধিকাংশ বেসরকারি স্কুলে স্বস্তি ফিরেছে। ওই সব স্কুলের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অভিভাবকেরা বকেয়া ফি মিটিয়ে দিলে স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে। তবে অভিভাবক সংগঠনগুলি জানিয়ে দিয়েছে, কোর্টের এই নির্দেশ তাদের কাছে বড় ধাক্কা। তারা ফি মকুব নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

Advertisement

কলকাতার অধিকাংশ বেসরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষের মতে, বেশির ভাগ স্কুলই অমানবিক নয়। তারা করোনা আবহে অভিভাবকদের অসুবিধার বিষয়টি বোঝে। অনেক স্কুলই ফি বাড়ায়নি, কিছু স্কুল ফি কমিয়ে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও অভিভাবকেরা যে-ভাবে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ-আন্দোলন করছিলেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে যে-সব অভিভাবক সত্যিকারের সমস্যায় আছেন, তাঁদের পাশে আছে আমাদের স্কুল। তাঁদের ছেলেমেয়েদের ফি মকুবও করেছি। কিন্তু সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অনেক অভিভাবক ফি না-মিটিয়ে সুযোগ বুঝে এই আন্দোলনে শামিল হয়ে ফি মকুব করাতে চাইছেন। এটা ঠিক নয়।’’ সুজয়বাবুর মতে, অতিমারির পরিস্থিতিতে যাঁদের সত্যিই ফি মকুব করা দরকার, আন্দোলনের ফলে সেই সব অভিভাবক বঞ্চিত হচ্ছেন।

ন্যাশনাল ইংলিশ হাইস্কুলের অধ্যক্ষ মৌসুমি সাহা বলেন, ‘‘আমাদের মতো বহু স্কুল সব ধরনের পরিকাঠামো দিয়েও ফি প্রায় সব স্তরের মানুষের নাগালের মধ্যেই রেখেছে। আমাদের পক্ষে সব পড়ুয়ার ফি মকুব করা খুব কঠিন। লকডাউনের মধ্যে ফি ঠিকমতো না-পাওয়ায় বহু স্কুল পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে। আদালতের নির্দেশে আমাদের মতো অনেক স্কুলই স্বস্তি পেয়েছে।’’

Advertisement

প্রায় একই কথা বলেছেন সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের প্রায় সব অভিভাবকই ইতিমধ্যে ফি মিটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ফি না-পাওয়ায় বহু স্কুল খুব সমস্যায় পড়েছে। তাদের পক্ষে আদালতের এই নির্দেশ স্বস্তিকর।’’ নব নালন্দার অধ্যক্ষ অরিজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘আমাদের স্কুল লকডাউনের জন্য বন্ধ থাকলেও অনলাইনে ক্লাস চলছে। স্কুল পরিচালনার বেশির ভাগ খরচ তো একই আছে। তা সত্ত্বেও আমাদের পক্ষে যতটা ফি মকুব করা সম্ভব, সেটা করেছি। এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের এমন নির্দেশ খুবই কার্যকরী।’’

লকডাউনের পর থেকেই ফি কমানোর দাবিতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ান্স ফোরাম’ নামে অভিভাবকদের একটি সংগঠন। ওই সংগঠনের আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্কুলের ফি বৃদ্ধি নিয়ে একটা মামলা আগে থেকেই চলছিল। একই বিষয়ে এক অভিভাবক ফের মামলা করেন। সাধারণত দেখা যায়, একই ধরনের একাধিক মামলা থাকলে সেগুলিকে যুক্ত করে এক বারে রায় বা নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কিন্তু সেটা হল না। তাই আমরা কিছুটা বিস্মিত। আমাদের আন্দোলন যখন সফল হতে যাচ্ছিল, তখন আদালতের এই নির্দেশ একটা বড় ধাক্কা।’’ সুপ্রিয়বাবু জানান, তাঁরা ফি কমানোর আন্দোলন আরও তীব্র করবেন। আইনজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন