নারকেল ভেঙে বিজ্ঞান কেন্দ্রের শিলান্যাস!

কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে ‘আশৈশব’ আরএসএসের সদস্য হিসেবে বর্ণনা করলেন দেশের অন্যতম বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স বা আইএসিএসের অধিকর্তা শান্তনু ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের শিলান্যাস করেন হর্ষ বর্ধন। গণেশ চতুর্থীর মতো শুভ দিনে শিলান্যাস হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন মন্ত্রী এবং অধিকর্তা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:০৫
Share:

সূচনা: ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স-এর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের শিলান্যাস করছেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। বৃহস্পতিবার যাদবপুরে। নিজস্ব চিত্র

মঞ্চটা বিজ্ঞানের। মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্টদের মধ্যে এক জন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রধান। অন্য জন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী। সেই মঞ্চে বিজ্ঞান কেন্দ্রের শিলান্যাস হল নারকেল ভেঙে, রীতিমতো অগ্নিসাক্ষী যজ্ঞ করে! এবং এসে পড়ল সঙ্গ-ঘনিষ্ঠতার উচ্চকিত সুর।

Advertisement

কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে ‘আশৈশব’ আরএসএসের সদস্য হিসেবে বর্ণনা করলেন দেশের অন্যতম বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স বা আইএসিএসের অধিকর্তা শান্তনু ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের শিলান্যাস করেন হর্ষ বর্ধন। গণেশ চতুর্থীর মতো শুভ দিনে শিলান্যাস হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন মন্ত্রী এবং অধিকর্তা।

নারকেল ভেঙে শিলান্যাস করেন মন্ত্রীই। ব্যবস্থা ছিল প্রশস্ত পুজোপাঠেরও। আইএসিএসের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে বারুইপুরে। কিন্তু সেই এলাকা এখন জলে-কাদায় ভরা। তাই শিলান্যাস অনুষ্ঠান হয় যাদবপুরের মূল ক্যাম্পাসে। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে চিহ্নিত করা হয়েছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসকে।

Advertisement

আইএসিএসের প্রেক্ষাগৃহে সাড়ে ছ’পৃষ্ঠার লিখিত বক্তৃতার বেশ কিছুটা জুড়ে হর্ষ বর্ধনের সবিস্তার পরিচয় জ্ঞাপন করেন অধিকর্তা। জানান, মন্ত্রী আশৈশব রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ বা আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী বক্তৃতা দিতে উঠে গণেশ চতুর্থীর শুভ দিনে এই শিলান্যাস হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সংস্কৃতিতে গণেশজিকে সদ্‌বুদ্ধির দেবতা হিসেবে মানা হয়। তাঁর আশীর্বাদ নিয়ে আমরা কাজ শুরু করলাম।’’ এই বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানেই গবেষণা করেছেন নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী সিভি রামন-সহ বহু বিশিষ্ট বিজ্ঞানী। এখান থেকে আরও সিভি রামন উঠে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

গণেশকে নিয়ে বিস্তর স্বস্তি প্রকাশ করলেও এ দিনের অনুষ্ঠানে কিছুটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতেও পড়তে হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। প্রশ্নোত্তর পর্বে গবেষকদের মধ্য থেকে ওঠা প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়ে যান তিনি। অভিযোগ ওঠে, ২০১৭ থেকে জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ বা জেআরএফের পরীক্ষা দিয়েও উত্তীর্ণ পড়ুয়ারা মেধাবৃত্তি পাচ্ছেন না। মন্ত্রী তাঁদের জানান, এটা খুব বড় কিছু বিষয় নয়। স্থানীয় ভাবেই মিটিয়ে নেওয়া হোক। কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে যখন এক গবেষক জানান, দেশ জুড়ে একই সমস্যায় ভুগছেন গবেষকেরা।

সামাল দেন মঞ্চে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব আশুতোষ শর্মা। তিনি কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)-এর ডিরেক্টর জেনারেলকে চিঠি লেখার পরামর্শ দেন গবেষকদের। তাতে যে ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি, তা স্পষ্ট হয় অনুষ্ঠানের পরে গবেষকদের বক্তব্যে। গবেষকেরা জানান, বৃত্তি নিয়ে আন্দোলন চলছে। তাঁরা মন্ত্রীর কাছ থেকে সদর্থক কিছু আশা করেছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন