Heat

Scorching heat: বৈশাখের শুরুতেই তপ্ত পুরুলিয়া থেকে ঝাড়গ্রাম, তাপপ্রবাহে পুড়ছে বাংলা, ঘরবন্দি কাটছে দুপুর

দক্ষিণবঙ্গের বহু শহরেই প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার করেছে তাপমাত্রা। আসানসোল, পানাগড়, বাঁকু়ডা, বর্ধমান শহর, দমদম, কলাইকুণ্ডা, কৃষ্ণনগর, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, শ্রীনিকেতনের মতো এলাকায় গ্রীষ্মের দাপটে নাজেহাল সকলে। স্বস্তিতে নেই কলকাতাও। এর মধ্যে বাঁকুড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছেছে ৪৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কলকাতায়ও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁইছুই (৩৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২২ ১৮:০৪
Share:

প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেরোলে যেন গনগনে আঁচের ছ্যাঁকা লাগছে। সোমবার পুরুলিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

বৈশাখের সবে ১১ তারিখ। এখনও বর্ষা আসতে ঢের দেরি। কিন্তু এখনই গরমের দাপটে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে বাংলা। পুরুলিয়া থেকে দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া থেকে বীরভূম— দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সর্বত্রই বেলা গড়াতেই সুনসান রাস্তাঘাট। প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেরোলে যেন গনগনে আঁচের ছ্যাঁকা লাগছে। তীব্র দাবদাহে বাড়িতে থেকেও অস্বস্তি। আপাতত বৃষ্টির দেখা নেই। আশঙ্কা রয়েছে তাপপ্রবাহের। উপরি হিসাবে রাজ্যের ৭২টি ব্লকে নেমেছে জলস্তর। সব মিলিয়ে বৈশাখের প্রথম ১১ দিনেই তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে বাংলা।

দক্ষিণবঙ্গের বহু শহরেই প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার করেছে তাপমাত্রা। আসানসোল, পানাগড়, বাঁকু়ডা, বর্ধমান শহর, দমদম, কলাইকুণ্ডা, কৃষ্ণনগর, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, শ্রীনিকেতনের মতো এলাকায় গ্রীষ্মের দাপটে নাজেহাল সকলে। এর মধ্যে বাঁকুড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছেছে ৪৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্বস্তিতে নেই কলকাতাও। এ শহরে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁইছুই (৩৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।

Advertisement

কী অবস্থা দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দাদের? নিত্যদিন বাড়ির বাইরে বার হতে হয় বীরভূমের বাসিন্দা তথা চাকরিজীবী সমীর বিশ্বাস বা বিশ্বভারতীর ছাত্রী মণিদীপা দাসকে। বৃষ্টির প্রার্থনা করছেন দু’জনেই। মণিদীপার কথায়, ‘‘প্রতি দিন গরম বাড়ছে। এই হাঁসফাঁস করা পরিস্থিতিতে কবে বৃষ্টি হবে, সে আশায় রয়েছি। কাজের জন্য বাইরে বার হতে হয়। তবে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা বাইরে বেরোচ্ছি না।’’

অসহ্য গরমে জলের আশ্রয়ে কচিকাঁচারা। সোমবার পুরুলিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

বৃষ্টির প্রার্থনা করলেও আপাতত সে ইচ্ছে পূরণ হওয়ার জো নেই। ২৮ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সেই সঙ্গে হাওয়া অফিসের আশঙ্কা, আগামী তিন দিন পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দুই বর্ধমানে তাপপ্রবাহ চলতে পারে। স্বস্তি নেই উত্তরেও। উত্তরের মালদহ এবং দুই দিনাজপুরে তাপমাত্রা বাড়বে বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞেরা।

Advertisement

বীরভূমের মতো প্রায় একই দশা পুরুলিয়ার। চিড়কা গ্রামের বাসিন্দা সুনীলকুমার পাণ্ডে বলেন, ‘‘তীব্র গরমে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। সকাল ১০টার পর বাড়ি থেকে বার হতেই পারছি না। এখানকার কয়েকটি গ্রামে বৈশাখের শুরু থেকেই জলকষ্ট দেখা দিয়েছে।’’

ভিড় বাড়ছে ঠান্ডা পানীয়-সহ ফলমূলের দোকানে। সোমবার হুগলিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।

পশ্চিম বর্ধমানে গত ১০-১২ দিন দুপুরের দিকে তাপমাত্রা প্রায় ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে পৌঁছচ্ছে। আবহাওয়াবিদদের মতে, আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে টানা চার-পাঁচ দিন এই ধরনের পরিস্থিতি থাকবে। আসানসোলের শিক্ষিকা জিনিয়া রায় বলেন, ‘‘রাতের দিকে তাপমাত্রা কিছুটা কম হচ্ছে বটে, তবে দিনে তাপপ্রবাহ একই থাকছে। গরম হাওয়া বইছে যেন।’’

দুই মেদিনীপুর বা ঝাড়গ্রামেও অস্বস্তি বাড়ছে। লস্যি জাতীয় ঠান্ডা পানীয়ে গরমের হাত থেকে সাময়িক স্বস্তি মিললেও দাবদাহ কমছে না। পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের সরবেড়িয়ার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ সেনাপতি বলেন, ‘‘দাবদাহে বাইরে বেরোনো মুশকিল। তবে গ্রামের দিকে এখনও পানীয় জলের সমস্যা হয়নি। তুলনায় শহরাঞ্চলগুলিতে পানীয় জলের স্তর অনেকটাই নীচে নেমেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন