উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
রাতের ট্রেনে প্রাক্তন মন্ত্রীর ঘুম কেড়ে নিল আরশোলা।
বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে চেপে কোচবিহারে ফিরছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, রাতভর তিষ্ঠোতে পারেননি। কখনও পোশাকের ভিতর দিয়ে ঢুকে পড়ছে আরশোলা। কখনও মাথায় বিড়বিড় করছে। আলো নেভালে আরও বেড়ে যাচ্ছে দৌরাত্ম্য। ওই ট্রেনের এসি টু টিয়ার কামরার অন্য আর এক যাত্রীর মুখেও শোনা গিয়েছে একই নালিশ। সকালের দিকে আরশোলার উৎপাত একটু কমলে যাত্রীরা বিশ্রাম নিতে পারেন।
কোভিড পরিস্থিতিতে এমনিতেই ট্রেন চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসকেও দীর্ঘ দিন বসিয়ে রাখা হয়েছিল। তার মধ্যে এমন অব্যবস্থায় ক্ষুব্ধ রবীন্দ্রনাথ। তাঁর আরও অভিযোগ, ওই কামরার সঙ্গে শৌচাগার বেহাল ছিল। ঠিক মতো সাফাই হয়নি। উত্তর-পূর্ব রেলের জনংযোগ আধিকারিক নীলাঞ্জন দেব বলেন, “পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার নির্দিষ্ট করে দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। অভিযোগ নির্দিষ্ট জায়গায় জানানো হয়।”
উত্তরবঙ্গ ঊন্নয়ন দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথের বাড়ি কোচবিহারে। বর্তমানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, “রাতভর জেগে কাটিয়েছি। শুধু আমি নই, গোটা কামরার সবাই। আলো নিভিয়ে চোখ বুজলেই পাঞ্জাবির ভেতরে ঢুকে পড়ছিল আরশোলা। ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করা যায়নি।” মাসুল গুণে নেওয়ার পরেও কেন পরিষেবার এমন হাল হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রবীন্দ্রনাথ। রেলের নিউ কোচবিহার স্টেশনের এক আধিকারিক বলেন, “এমন অভিযোগ আমরাও পেয়েছি। নির্দিষ্ট জায়গায় জানিয়ে দেওয়া হবে।” শুধু উত্তরবঙ্গ নয় রাজধানী এক্সপ্রেস, সরাইঘাট এক্সপ্রেস নিয়েও রয়েছে এমন অভিযোগ। কোথাও আরশোলা বা কোথাও ইঁদুরের দৌরাত্ম্য।
সাফাইয়ের কাজ হওয়ার পরেও, সিটের গদির ফাঁকে, বেসিনের পাইপে, শৌচাগারের ভিতরে আরশোলার বংশ দিব্যি বেঁচেবর্তে থাকে বলে অভিযোগ। মুক্তির খোঁজে বেশ কয়েক বছর আগে রেলের সদর দফতরের গবেষণা শাখা তথা রিসার্চ, ডিজাইন এন্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশনের (আরএসডিএ) দ্বারস্থ হয় রেলের নিউ জলপাইগুড়ি শাখা। কিন্তু জুরাসিক যুগের ‘বংশগৌরব’ নিয়ে পতঙ্গটি এখনও বহাল তবিয়তেই রয়ে গিয়েছে।