CM Mamata Banerjee

বিজেপি শাসিত রাজস্থানে বাংলাদেশি সন্দেহে বন্দি বঙ্গের কয়েকশো শ্রমিক! প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান মমতা

বাংলায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে! কখনও আবার আটক করে রাখা হচ্ছে। এই মুহূর্তে বিজেপি শাসিত রাজস্থানে বাংলাদেশি সন্দেহে আটকে রাখা হয়েছে ইটাহারের কয়েকশো শ্রমিককে। অবিলম্বে তাঁদের সাহায্য করার জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫ ১৫:২৬
Share:

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।

মহারাষ্ট্রের ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। অথচ তার এক সপ্তাহের মাথায় ফের একই ধাঁচের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। বিজেপি শাসিত রাজস্থানে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে রাখা হয়েছে ইটাহারের কয়েকশো শ্রমিককে। বাংলায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে! কখনও আবার আটক করে রাখা হচ্ছে। এই অভিযোগে মঙ্গলবার বিধানসভায় ফের ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, ভিন্‌রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের সাহায্য করার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশও দিলেন তিনি।

Advertisement

উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের মান্নাই অঞ্চলের খিসাহার গ্রাম-সহ পাশ্ববর্তী গ্রামগুলি থেকে ৩০০-রও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক রাজস্থানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, বাংলা ভাষায় কথা বলার ‘অপরাধে’ তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করে রাখা হয়েছে। খবর প্রকাশ্যে আসতেই আবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। রাজ্যের মুখ্যসচিব পন্থকে অবিলম্বে রাজস্থানে হেনস্থার শিকার শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেনের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন আটকে পড়া শ্রমিকেরা। বিষয়টি রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে জানিয়েছেন বিধায়ক।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অন্যান্য রাজ্যের দেড় কোটি শ্রমিক এ রাজ্যে কাজ করেন। তাঁদেরকে তো আমরা অসম্মান করি না! কিন্তু বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বলা কি অপরাধ? স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এঁরা কী ভাষায় কথা বলতেন? এরা সে সব ভুলে গিয়েছে।’’ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নজরে আনতে চান বলেও জানিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপি শাসিত রাজ‍্যগুলিতেই বার বার এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, ‘‘বাঙালিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব কী, তা জানি না। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বাঙালিদের নিয়ে সমস্যা রয়েছে।’’ আপাতত রাজস্থানে বাঙালি শ্রমিকদের হেনস্থার বিষয়টি নিয়ে সে রাজ্যের বিজেপি সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন মুখ‍্যসচিব পন্থ। শীঘ্রই তাঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।

Advertisement

গত কয়েক মাস ধরেই মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, অসম-সহ বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে ভুয়ো নথিতে ভারতে থাকা অবৈধবাসীদের পুরোদমে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। সম্প্রতি অসম সরকারের ‘পুশ ব্যাক’ নীতি ঘিরেও বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি মহারাষ্ট্রে কাজ করতে যাওয়া তিন পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে মুম্বই পুলিশ। তাঁদের নথি যাচাই না করেই পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত দিয়ে তাঁদেরকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের নজরে এলে রাজ্য প্রশাসনের উদ্যোগে ফ্ল্যাগ মিটিং করে ওই তিন জনকে আবার ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়। এই ঘটনাকে ঘিরে সপ্তাহখানেক আগেই বিধানসভার অধিবেশনে সরব হয়েছিলেন মমতা। ভরা বিধানসভায় বিজেপিকে দুষেওছিলেন। এ বার আরও এক বার বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement