হাইকোর্টের তোপে কমিশনার

জুটপার্ককে পাট সংগ্রহ করতে দেওয়ার নির্দেশ

জুট কমিশনারের আপত্তিতে পাট সংগ্রহ করতে পারছিল না বর্ধমানের শক্তিগড় জুটপার্ক। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে বৈষম্যমূলক জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, জুট কমিশনার পাটের বরাদ্দ বন্ধ করে খেয়ালখুশি মতো আচরণ করেছেন। অবিবেচকের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৬
Share:

জুট কমিশনারের আপত্তিতে পাট সংগ্রহ করতে পারছিল না বর্ধমানের শক্তিগড় জুটপার্ক। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে বৈষম্যমূলক জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, জুট কমিশনার পাটের বরাদ্দ বন্ধ করে খেয়ালখুশি মতো আচরণ করেছেন। অবিবেচকের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Advertisement

হাইকোর্টের বিচারপতি তাপস মুখোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার জুট কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন, সামনের জানুয়ারি থেকে শক্তিগড় জুটপার্ককে পাট সংগ্রহের অনুমতি অর্থাৎ ‘পারচেজ কন্ট্রোল অর্ডার’ দিতে হবে। রাজ্যের অন্য জুটমিলগুলির ক্ষেত্রে যে যে নিয়ম মেনে দৈনিক পাট সংগ্রহের মাপ বরাদ্দ হয়, এই জুটপার্কের ক্ষেত্রেও জুট কমিশনারকে তা মানতে হবে।

২০১৩ সালে বর্ধমানের বড়শূলে ২৫ একর জায়গা নিয়ে জুটপার্ক (শক্তিগড় টেক্সটাইল অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড) তৈরি হয়েছে। মূলত পাটের বস্তা তৈরি ও পাটের অনুসারী শিল্প গড়ার জন্য কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক ‘জুট টেকনোলজি মিশন’-এর অধীনে ওই জুটপার্ক তৈরির অনুমতি দিয়েছিল। ওই পার্কের পরিচালনায় রয়েছে মুরলীধর রতনলাল এক্সপোর্টস লিমিটেড। ওই সংস্থার আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানান, দৈনিক ৭০ মেট্রিক টন ‘পারচেজ কন্ট্রোল অর্ডার’ পাওয়ার জন্য ২০১৩ সালের শেষের দিকে জুট কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়। জুট ম্যানেজমেন্ট বোর্ডও কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী জুটপার্কের জন্য কন্ট্রোল অর্ডার দিতে সুপারিশ করেছে। কিন্তু, জুট কমিশনার সেই আবেদন মঞ্জুর করেননি। আবেদন যে মঞ্জুর হবে না, ডেপুটি জুট কমিশনার ২০১৪ সালের ২৯ মে চিঠি দিয়ে তা জানিয়েও দেন।

Advertisement

সেই চিঠি পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জুট কমিশনার, ডেপুটি কমিশনারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে চলতি বছর জানুয়ারিতে দৈনিক কিছু মেট্রিক টন ‘পারচেজ কন্ট্রোল অর্ডার’ ছ’মাসের জন্য বরাদ্দ করেন জুট কমিশনার। ফলে, জুলাইয়ে ফের বরাদ্দ বন্ধ হয়। বিচারপতি তাপস মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে ফের এক মাসের জন্য বরাদ্দ হলেও, পুজোর সময় থেকে একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে সঞ্জয়বাবুর অভিযোগ।

মামলার শুনানির সময় জুট কমিশনার ও ডেপুটি জুট কমিশনারের পক্ষে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ আদালতে জানান, ওই জুটপার্ককে ‘পারচেজ কন্ট্রোল অর্ডার’ দেওয়া হবে কি না, সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার জুট কমিশনারেরই। পাটের বরাদ্দ পাওয়ার অধিকার নেই জুটপার্কের। তিনি আরও যুক্তি দেন, জুটপার্ক গড়া হয়েছে অনুসারী শিল্পগুলিকে উৎসাহ দিতে। চিরাচরিত পাটের বস্তা তৈরির জন্য নয়।

ডিসেম্বরের গোড়ায় শুনানি শেষ হয়। বিচারপতি মুখোপাধ্যায় জুট কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন, জানুয়ারি থেকে প্রাথমিক ভাবে দৈনিক ৩৫ মেট্রিক টন ‘পারচেজ কন্ট্রোল অর্ডার’ দিতে। পরবর্তী কালে নিয়মিত ভাবে ওই জুটপার্ক পরিদর্শন করে আইন মাফিক পাটের বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন