৩ শিক্ষক রেখে পুনর্নিয়োগেরই রাস্তায় শিবপুর

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পারেনি। তারা রাজ্য সরকারের অধীন বলে। শিবপুরের আইআইইএসটি পারল। কেননা তারা কেন্দ্রের আওতায়। পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবসরের পরে শিক্ষকদের পুনর্নিয়োগ স্থগিত হয়ে যাওয়ার পরেও শিবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বা আইআইইএসটি তিন জন প্রাক্তন অধ্যাপককে ‘ভিজিটিং প্রফেসর’ হিসেবে রেখে দিয়েছে।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৩০
Share:

ফাইল চিত্র।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পারেনি। তারা রাজ্য সরকারের অধীন বলে। শিবপুরের আইআইইএসটি পারল। কেননা তারা কেন্দ্রের আওতায়।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবসরের পরে শিক্ষকদের পুনর্নিয়োগ স্থগিত হয়ে যাওয়ার পরেও শিবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বা আইআইইএসটি তিন জন প্রাক্তন অধ্যাপককে ‘ভিজিটিং প্রফেসর’ হিসেবে রেখে দিয়েছে।

অবস্থান বাংলায় হলেও এটা সম্ভব হয়েছে আইআইইএসটি কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান বলেই। রাজ্যের নিষেধাদেশ সেখানে প্রযোজ্য নয়। এক সময়ে আইআইইএসটি-ও অবশ্য রাজ্য সরকারের অধীনেই ছিল। তখন নিষেধ ছিল না বলে সেই সময়ের নিয়ম অনুযায়ী অবসরপ্রাপ্ত কিছু শিক্ষককে পুনর্নিয়োগও করা হয়েছিল। রাজ্য সরকার পুনর্নিয়োগ রদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সম্প্রতি। শিবপুরের ওই প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রের হাতে চলে গিয়েছে তার আগেই। তাই রাজ্যের অধীনে থাকাকালীন যাঁরা পুনর্নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাঁদেরই তিন জনকে ‘ভিজিটিং প্রফেসর’ হিসেবে রেখে দিতে কোনও সমস্যা হয়নি।

Advertisement

আইআইইএসটি যাঁদের ‘ভিজিটিং প্রফেসর’ করে রেখে দিল, তাঁরা হলেন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের শেখররঞ্জন ভট্টাচার্য, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অশোক মৈত্র এবং রসায়ন বিভাগের জয়তী দত্ত।

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পুনর্নিয়োগ স্থগিতের সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে শিক্ষামহলে। তারই মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সদ্য অবসরপ্রাপ্ত তিন শিক্ষককে ‘প্রফেসর ইন রেসিডেন্স’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস-পিছু সম্মান-দক্ষিণা দিয়ে ওই তিন জনকে অতিথি-শিক্ষক হিসেবে রেখে দিতে পারে। কিন্তু পুনর্নিয়োগ চলবে না। পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয় যাদবপুর।

২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত শিবপুর আইআইইএসটি অর্থাৎ তৎকালীন বেসু ছিল রাজ্য সরকারের আওতায়। তখন যে-সব শিক্ষক-শিক্ষিকা পুনর্নিয়োগের সুযোগ পেয়েছিলেন, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রের আওতায় চলে যাওয়ার পরেও তাঁদের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছিল পুরনো নিয়মে। নিয়ম অনুযায়ী কোনও শিক্ষক পুনর্নিয়োগ পেলে ৬৫ বছর পর্যন্ত প্রথম দফায় দু’বছর পরে, অতঃপর প্রতি বছর নিয়োগ পুনর্নবীকরণ আবশ্যিক। যে-তিন জনকে ভিজিটিং প্রফেসর করা হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে পুনর্নবীকরণের সময় এসে গিয়েছিল। তা ছাড়া কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী এখন আইআইইএসটিতে শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫।

রাজ্য সরকারের অধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০-এর বদলে ৬৫ করার দাবি উঠেছে। পুনর্নিয়োগ রদের বিরুদ্ধে যাঁরা সরব হয়েছেন, তাঁদেরও অনেকে অবসরের বয়স বাড়ানোর কথা বলছেন। তবে তাঁদের মূল বক্তব্য, যোগ্য শিক্ষকের বড়ই অভাব। পড়ুয়াদের স্বার্থেই দক্ষ শিক্ষকদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো দরকার। সেই জন্যই চাই পুনর্নিয়োগ। পঠনপাঠনের প্রয়োজনেই তাঁরা যোগ্য শিক্ষকদের রেখে দিচ্ছেন বলে জানান আইআইইএসটি-র অধিকর্তা অজয় রায়ও। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘এই অধ্যাপকেরা খুবই যোগ্য। আইআইইএসটি-র স্বার্থেই এঁদের ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’

রেজিস্ট্রার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, আইআইইএসটি ওই অধ্যাপকদের চায় শিক্ষার স্বার্থেই। এমন দক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকারা চলে গেলে ছাত্রদেরই ক্ষতি। পুনর্নিয়োগের সুযোগে অন্যত্র ৬৫ বছর পর্যন্ত কাজ করার পরে আইআইইএসটি-তে যোগ দিয়েছেন, এমন উদাহরণও আছে। রেজিস্ট্রার জানান, যাদবপুরের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন হিরণ্ময় সাহা। সেখানে পুনর্নিয়োগের মেয়াদ শেষ করে শিবপুরে যোগ দেন তিনি। হিরণ্ময়বাবু এখন আইআইইএসটি-র গ্রিন এনার্জি সেন্টারে কর্মরত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন