—ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে চাষিদের হাতে জমি ফিরিয়ে তো দেওয়া হয়েছেই। তার পাশাপাশি সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানার ৯৫৫.৯০ একর জমি চাষযোগ্য করে তোলা হয়েছে বলে বিধানসভায় জানান কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
কৃষিমন্ত্রী সোমবার বিধানসভায় জানান, গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে পরিকল্পনা অনুযায়ী কৃষির উন্নতি এবং সেচের ব্যবস্থার জন্য রাস্তা, সেচ খাল, নালা, অগভীর নলকূপ ইত্যাদির জন্য ওই জমির কিছু অংশ ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে তা কোনও কৃষকের চাষির জমি নয়।
বিধায়ক সমর হাজরার প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী সভায় জানান, সিঙ্গুরে সর্ষে, মুসুর, খেসারি, আলু, বোরো ধান, মুগ, কলাই, আনাজ, তিল, ভুট্টো ও পাটের চাষ হচ্ছে।
২০০৬ সালে টাটাদের কারখানার জন্য ৯৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। ওই জমির মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৩০০ একরের কিছু বেশি অধিগ্রহণে সায় দেননি সিঙ্গুরের চাষিরা। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনিচ্ছুক চাষিদের জমি ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে তিনিই চালু করেন সিঙ্গুর প্যাকেজ। ৩৬২৫টি পরিবার সেই সময় থেকে দু’টাকা কিলোগ্রাম দরে মাসে মাথাপিছু আট কেজি চাল, তিন কেজি গম পাচ্ছে। মাসে দু’হাজার টাকা ভাতাও পায় তারা। সেই সময়েই সিঙ্গুর আইন এনে জমি ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য।
মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। ২০১৬-র ৩১ অগস্ট শীর্ষ আদালত রায় দেয়, সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। ফলে ১২ সপ্তাহের মধ্যে কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। সেই নির্দেশ রূপায়ণ করে ২০১৬ সালে পুজোর মুখে সিঙ্গুরের কারখানার কাঠামো ভেঙে জমি চাষিদের মধ্যে বিলিয়ে দেয় রাজ্য। বিরোধীদের অভিযোগ, কারখানার কাঠামো ভেঙে ফেলা হলেও ন্যানো কারখানার জন্য নির্ধারিত জমি চাষযোগ্য হয়নি।
কৃষিমন্ত্রী অবশ্য জানান, বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। অধিগৃহীত জমি চাষযোগ্য হয়েছে। সিঙ্গুর প্যাকেজও বলবৎ আছে। শুধু সিঙ্গুর নয়, সারা রাজ্যেই কৃষিজমির পরিমাণ বেড়েছে। তাঁর দাবি, রাজ্যে ৫৪ হাজার হেক্টর পতিত জমিকে চাষের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। আরও ১০ হাজার হেক্টর পতিত জমি চাষযোগ্য হয়ে যাবে। শহর বাড়লেও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চাষের জমি।