সীতারাম ইয়েচুরি। ছবি: সংগৃহীত
বঙ্গে বিজেপি এবং তৃণমূল, দু’দলই মৌলবাদকে উৎসাহ দিচ্ছে। এই জোড়া বিপদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘ধর্মনিরপেক্ষ, রাজনৈতিক বন্ধু’দের সঙ্গে নেওয়ার পক্ষেই ফের সওয়াল করলেন সীতারাম ইয়েচুরি। নাম না করে তাঁর ইঙ্গিত কংগ্রেসের দিকেই। দমদমে সোমবার গৌতম দেবকে মঞ্চে বসিয়ে ইয়েচুরি ওই সওয়াল করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদককে কৌশলে পলিটব্যুরোর চিঠির জবাব দেওয়ার লাইন দেখিয়ে দিলেন বলেই দলের একাংশের ব্যাখ্যা!
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের আয়োজনে এ দিন দমদমের রবীন্দ্র ভবনে কার্ল মার্ক্সের দ্বিশতবার্ষিকীর উপরে আলোচনায় বক্তা ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক। সেখানেই তিনি বিজেপি এবং তৃণমূলের রাজনীতির বিপদ সম্পর্কে দলকে সর্তক করে বলেন, নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে পারাই মার্ক্সবাদের শিক্ষা। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার এবং গণতন্ত্রের হত্যা রুখতে ধর্মনিরপেক্ষ, রাজনৈতিক বন্ধুদের সঙ্গে নিয়েই লড়াই করা উচিত। একা একা না লড়ে সঙ্গীদের পাশে রাখাই এখন বামপন্থীদের দায়িত্ব। ইয়েচুরির কথায়, ‘‘সেই দায়িত্ব পালন করতে না পারলে ব্যর্থতা মার্ক্স বা মার্ক্সবাদের নয়। ব্যর্থতা আমাদের!’’ দলীয় সূত্রের মতে, দায়িত্বের কথা বলে ইয়েচুরি আসলে বার্তা দিয়েছেন প্রকাশ কারাটদের দিকেই।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, রাজ্যসভার নির্বাচনে কংগ্রেসের সমর্থন না নেওয়ার কারণ দেখিয়ে ইয়েচুরিকে ফের প্রার্থী না করায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তোপ দেগেছিলেন গৌতমবাবু। তাঁর ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠিয়েছে পলিটব্যুরো। গৌতমবাবুদের সভায় গিয়ে এ দিন স্বয়ং ইয়েচুরিই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে সিপিএমের মধ্যে অবশ্যই দ্বিমত আছে। এই নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের প্রশ্ন ও বিভ্রান্তির কথা তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, এমন ব্যাখ্যাই এর পরে গৌতমবাবু পলিটব্যুরোকে দিতে পারেন বলে সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত। তবে কারাটদের নাম না করে ইয়েচুরির প্রতি তাঁদের ‘ঈর্ষা’র যে প্রসঙ্গ গৌতমবাবু তুলেছিলেন, তার জন্য দুঃখপ্রকাশ করতে হতে পারে।
গৌতমবাবুর ওই জবাবের বিষয়ে আলোচনা হবে পরবর্তী কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে। তার আগে আজ, মঙ্গলবার আলিমুদ্দিনে সাংগঠনিক বিষয়ে রাজ্য কমিটির বৈঠকে হাজির থাকছেন ইয়েচুরি।